তারার জন্ম দিলো ব্ল্যাক হোল
ব্ল্যাক হোল (Black Hole)। মহাকাশের এক অতিকায় রাক্ষস। যার হাঁমুখ গিলে খায় সব কিছু। এক কণা আলোর পর্যন্ত নিষ্কৃতি নেই। মহাজাগতিক এক ‘মনস্টারে’র তকমা এভাবেই এতকাল পেয়ে এসেছে কৃষ্ণ গহ্বর। কিন্তু সম্প্রতি এমনই এক দৃশ্যের সাক্ষী হল NASA, যা থেকে এতদিনে চেনা ধারণায় ফাটল ধরল।
গত ৩০ বছর ধরে মহাকাশে একের পর এক আশ্চর্য পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মহাশূন্য সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের পরিধিকে ক্রমশ বিস্তৃত করতে সাহায্য করেছে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ।
এবার সেই ‘বৃদ্ধ’ হাবলই মহাকাশে নজরদারি চালানোর সময় প্রত্যক্ষ করল এমন এক ব্ল্যাক হোলকে, যে জন্ম দিচ্ছে নক্ষত্রদের! অর্থাৎ নক্ষত্র পেলেই গিলে ফেলার যে ‘বদনাম’ এতদিন বয়ে এসেছে ব্ল্যাক হোল এই দৃশ্য তারই এক উলট পুরাণ। যা ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে এক নতুন ধারণা দিল।
পৃথিবী থেকে ৩ কোটি আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে এক ছায়াপথ ‘হেনিজে ২-১০’। আকারে সে ‘বামন’। সেই ছায়াপথেই রয়েছে তারাদের এক ‘নার্সারি’। অর্থাৎ সেখানে জন্ম নেয় তারারা। আর সেই তারারা জন্ম নিচ্ছে এক ব্ল্যাক হোল থেকে।
দেখা গিয়েছে উগরে নেওয়া বদলে ওই ব্ল্যাক হোলের শরীর থেকে প্রচণ্ড দ্রুতগতিতে নির্গত হচ্ছে গ্যাস। ঘণ্টায় ১০ লক্ষ মাইল গতিবেগে বেরিয়ে আসা ওই গ্যাস ছিটকে এসে ওই অঞ্চলে নক্ষত্রের জন্ম দিচ্ছে। ব্ল্যাক হোল থেকে ওই নক্ষত্রের নার্সারি পর্যন্ত বিস্তৃত আলোর ছটা যেন এক অ্যাম্বিলিক্যাল কর্ডের মতো দেখাচ্ছে। সেই আলোর নাড়ি ছিঁড়ে জন্ম নিচ্ছে নতুন তারারা।
কার্যতই এই দৃশ্য দেখে মুগ্ধ বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, এই আলোর এত বেশি গতির জন্যই তা ঠান্ডা হওয়ার সময় পাচ্ছে না। তাই উত্তপ্ত অবস্থায় ওই পথ পাড়ি দিয়ে তৈরি করছে নক্ষত্র।
ব্ল্যাক হোলটি খুব বেশি বড় নয় বলেই এভাবে গ্যাস উগরে দিচ্ছে সেটি, মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। কী করে ব্ল্যাক হোলের জন্ম হল তা নিয়ে নানা মত রয়েছে। এই ঘটনা সেই বিষয়টিতেও আলোকপাত করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।