ঢাকা: দেশের উপকূলে আছড়ে পড়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে এগিয়ে চলেছে। এটি ঢাকা ও কুমিল্লাঞ্চল হয়ে দুপুর থেকে বিকেল নাগাদ ভারতে চলে যাবে। ত্রিপুরা থেকে আসাম এবং এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চল দিয়ে অনেকটা দুর্বল হয়েই অতিক্রম করবে এই ঘূর্ণিঝড়।
রোববার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান আবহাওয়াবিদ ড. আব্দুল মান্নান।
তিনি বলেন, এটি ঘণ্টায় ৮-১০ কিলোমিটার গতিতে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঝড়টি দুপুর থেকে বিকেল নাগাদ ঢাকা ও কুমিল্লাঞ্চল হয়ে ভারতের ত্রিপুরা-আসামের দিকে অগ্রসর হতে হতে একেবারেই দুর্বল হয়ে যাবে। এর ফলে ঢাকাসহ ঝড়ের গতিপথ অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।
আবহাওয়াবিদ ড. আব্দুল মান্নান বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে খুলনা, সাতক্ষীরা এবং বাগেরহাট অঞ্চলে অবস্থান করছে। এটি তার অবস্থান থেকে ক্রমান্বয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে মাদারীপুর, ফরিদপুর, ঢাকা ও কুমিল্লাঞ্চলের ওপর দিয়ে অতিক্রম করে ভারতের আসাম অঞ্চলের দিকে যেতে যেতে দুর্বল হয়ে যাবে। আর এজন্য দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এ সময় ঢাকাসহ ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথ অঞ্চলে হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হলেও নদী ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে আগের মতোই বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ঝড় কিছুটা দুর্বল হয়ে গেলেও এখনো সাগর উত্তাল রয়েছে। তাই মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ সংকেত বজায় থাকবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়াবিদ মান্নান বলেন, চলতি বছর যতগুলো ঘূর্ণিঝড় হয়েছে, তার অধিকাংশই সুন্দরবনকেন্দ্রিক হওয়ায় রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মূল কারণ সুন্দরবন অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড় বেশিদূর এগোতে পারে না। তার আগেই ঘূর্ণিঝড়গুলো দুর্বল হয়ে যায়। কিন্তু একই ঘূর্ণিঝড় যদি বরিশালকেন্দ্রিক হতো তাহলে বাংলাদেশের জন্য বড় দুর্যোগ বয়ে আনতো। সুতরাং একথা বলা অনস্বীকার্য যে সুন্দরবন ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।