সুইডেনের অধিবাসী গ্রেটা থুনবার্গ। মাত্র ১৬ বছর বয়সে পুরো পৃথিবী জুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন এই কিশোরী পরিবেশবাদী। তার ডাকে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে জড়ো হয়েছেন বিভিন্ন দেশের নানা বয়স ও শ্রেণি-পেশার প্রায় অর্ধকোটি মানুষ।পালিত হয়েছে ‘ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার’।
সম্প্রতি পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ কনাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে বৈঠককালে তাকেসহ অন্যান্য বিশ্ব নেতাদেরকেও পরিবেশের জন্য আরো বেশিকিছু করার আহ্বান জানান।পরে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ট্রুডো বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য দায়ী ‘গ্রিনহাউজ গ্যাস কমাতে যথেষ্ট কাজ করছেন না।’
গ্রেটা বলেন, “বিশ্বব্যাপী সব রাজনীতিবিদেরকেই আমি একই কথাই বলব। শুধু শুনুন আর আজকের দিনের বিজ্ঞানের অগ্রগতির ধারায় কাজ করে যান।” গ্রেটার সঙ্গে বৈঠক শেষে পরবর্তীতে ট্রুডোও তার সঙ্গে পুরোপুরি একমত পোষণ করেন।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্বনেতাদের ব্যর্থতার ফলে কানাডায় লাখো মানুষের উপস্থিতিতে জলবায়ু ধর্মঘট হয়েছে এবং একে কেন্দ্র করে দেশটির আরও ১০০টি শহরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন কিশোরী পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ।
আন্দোলনকারীরা কানাডার রাজপথে বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন। তাদের দাবি, জলবায়ু সংকট সমাধানে বিশ্বনেতাদের কঠোর অবস্থান। গ্রেটা থুনবার্গের ‘ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার’ আন্দোলনে এ সংহতি ধর্মঘটের সূচনা হয়।
সোমবার জাতিসংঘের সামনে দাঁড়িয়ে বিশ্বনেতাদের জলবায়ু মোকাবেলায় ব্যর্থতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া গ্রেটা থুনবার্গ বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সেই দিনটি আমাদের সবার জন্য মর্মস্পর্শী একটি দিন, তাদের সবার জন্য যারা আমাদের সাথে মিছিলে ও ধর্মঘটে আগ্রহী ছিলো।’ এসময় তিনি আরও বলেন, ‘আমি অন্তত এটুকুই বলতে পারি যে সেই দিনটি ছিলো বিশ্বের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
এদিকে শনিবারের ধর্মঘটের সংগঠকরা বলছেন শুধু কানাডার পূর্বাঞ্চলীয় শহর মন্ট্রিল থেকেই ১৫ লাখ লোক জড়ো হয়েছে। অবশ্য দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমকে ধর্মঘটের সাথে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছে এ সংখ্যা সোয়া তিন লাখের কাছাকাছি।ধর্মঘট পালনে সহায়তার জন্য বিভিন্ন শহরে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। এছাড়াও, শহরের সরকারি কার্যালয় এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোও এতে অংশ নেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে এ ধর্মঘট বহুলাংশে শান্তিপূর্ণ।
লিয়া ইলার্দো নামক একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী যিনি এ আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত।তিনি বলেন, ‘ৃআমরা তাহলে কেন পড়াশুনা করছি যেখানে মানুষের অস্তিত্বই আজ সংকটের সম্মুখীন এবং পৃথিবী নামক গ্রহটিই এখন অনিরাপদ ?’
তিনি জলবায়ুর এ পরিবর্তনকে মোকাবেলা করার জন্য কানাডার প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান এবং সারা বিশ্বকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।