ফসলি মাঠে ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপালের আক্রমনের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার গত শনিবার (০১/০১/২০২০ খ্রিঃ তারিখ) জাতীয় জরুরী অবস্থা ঘোষনা করেছে
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশের ফসল ও কৃষকদের রক্ষায় জাতীয় জরুরী অবস্থা জারী করেছে। পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, গত দু’দশকেরও বেশী সময়ের মধ্যে এবারই আক্রমন ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ।
পাকিস্তান সরকার দেশটির পূর্বাঞ্চলে মরু পঙ্গপালের আক্রমনের কবল হতে মাঠের ফসল রক্ষায় জাতীয় জরুরী অবস্থা ঘোষনা করে।
গত শুক্রবার পরিস্থিতির বিষয়ের উপর সরকারী ব্রিফিংয়ের পর শনিবার ইমরান খান জরুরী অবস্থা ঘোষনা করেন। জরুরী অবস্থা ঘোষনার পর দেশটির তথ্যমন্ত্রী ফিরদৌস আশিক আওয়ান বলেন,
“আমরা গত দু’দশকেরও বেশী সময় ধরে পঙ্গপালের আক্রমনের শিকার হচ্ছি, তবে এবারের অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। তাই এ হুমকীর মোকাবেলায় জাতীয় জরুরী অবস্থা ঘোষনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার ।”
মরুভূমির পঙ্গপাল তৃণভোজী বড় বড় ঘাঁস ফড়িং এর মত দেখতে – যারা গত জুন ২০১৯ এ ইরান হতে পাকিস্তানে প্রবেশ করে এবং এর মধ্যে পাকিস্তানের বিস্তৃত এলাকার তুলা, ভূট্টা, গম এবং অন্যান্য ফসল খেয়ে সর্বনাশ করে দিয়েছে।
অনুকুল আবহাওয়া এবং সরকারের দেরীতে ব্যবস্থা নেওয়ায় ইতোমধ্যে পঙ্গপালের দলে বেশ বংশ বৃদ্ধি হয়ে বহু ফসলের মাঠ ধ্বংস করে ফেলেছে।
পাকিস্তানের প্রসিদ্ধ ডন পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মন্ত্রী মখদূম খুসরো বখতিয়ার বলেছেন, “পঙ্গপালের ঝাঁক বর্তমানে চোলিস্তানের পাশে পাকিস্তান-ভারত সীমান্তের নিকটবর্তী স্থানে রয়েছে এবং এর পূর্বে তাদের দল সিন্ধু ও বেলুচিস্তানে ছিল।”
গত শুক্রবার বখতিয়ার এক ব্রিফিং এ পাকিস্তানের আইনজীবিদের বলেন, পঙ্গপালের আক্রমন ভয়াবহ, অভূতপূর্ব এবং উদ্বেগজনক। পাকিস্তানের সংবাদপত্র দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বখতিয়ারকে উদ্ধৃত করে বলেছে,
“পঙ্গপালের আক্রমন হতে ১,২১,৪০০ হেক্টর জমির ফসল রক্ষায় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং ২০,০০০ হেক্টর জমিতে বায়ু স্প্রে করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান যে, “ জেলা প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিমান বাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীকে পঙ্গপালের আক্রমন মোকাবেলায় নিয়োজিত করা হয়েছে এবং ফসল বাঁচাতে অভিযান চালানো হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এ সমস্যা মোকাবেলায় জনগনকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, “কৃষিকাজ ও কৃষকদের সুরক্ষায় সরকারের অগ্রাধিকার রয়েছে।”
ডন পত্রিকা আরও জানিয়েছেন যে, ইমরান খান আরও বলেন যে, পঙ্গপালের আক্রমন হতে ফসল রক্ষায় ফেডারেল সরকার সম্ভাব্য সব রকম পদক্ষেপ নেবে এবং পঙ্গপালের ঝুঁকির প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়ে ফসলের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রদান করবে।
সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে পাকিস্তান পঙ্গপালের মারাত্মক হুমকীতে পড়েছিল। বর্তমানে পঙ্গপালের ঝাঁক প্রতিবেশী ভারত এবং পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোতে প্রভাব বিস্তার করেছে।
Source: Jenipher Camino Gonzalez, DW live TV