জীবাশ্ম জ্বালানি সম্প্রসারণ রুখে দিতে ঢাকায় ‘ডোন্ট গ্যাস এশিয়া’ ক্যাম্পেইন শুরু
বাংলাদেশে জীবাশ্ম জ্বালানির সম্প্রসারণ রুখে দিতে ঢাকায় ‘ডোন্ট গ্যাস এশিয়া’র ক্যাম্পেইন শুরু করা হয়েছে। বুধবার ঢাকাসহ একযোগে টোকিও, ম্যানিলা, ইঞ্চেওন, মান্ডালুইয়ং, জাকার্তা, চিয়াং মাই, হানই, দিল্লি, কলকাতা, কাঠমুন্ডু, লাহোর এবং করাচিতেও এই ‘ডোন্ট গ্যাস এশিয়া’ ক্যাম্পেইনের যাত্রা শুরু হয়।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ইকুয়িটি বিডি, ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, বেলা, ব্রতী, ক্লিন, ফ্রেন্ডস অফ দ্যা আর্থ এশিয়া প্যাসিফিক, গ্লোবাল ল থিংকারস সোসাইটি, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে এই ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়। এ উপলক্ষে সেখানে মূকাভিনয় ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, পুরো এশিয়াতে এই সমাবেশ আয়োজন ও সমন্বয় করেছে এশিয়া এনার্জি নেটওয়ার্ক এবং এপিএমডিডি (এশিয়ান পিপল’স মুভমেন্ট ফর ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট)।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশীদ এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন—বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এ.এস.এম. বদরুল আলম, ফ্রেন্ডস অফ দ্যা আর্থ এশিয়া প্যাসিফিকের প্রতিনিধি বারীশ হাসান চৌধুরী, নিরাপদ ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল
সাইদ রানা, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদের প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলাম তুব্বুস, গ্লোবাল ল থিংকারস সোসাইটির প্রেসিডেন্ট রাওমান স্মিতা, ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের সমন্বয়কারী এস.যেড. অপু প্রমুখ।
এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এপিএমডিডি) সমন্বয়কারী এবং এশিয়ান এনার্জি নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক লিডি ন্যাকপিল বলেন, ‘এশিয়ায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস টার্মিনাল, পাওয়ার প্লান্ট এবং পাইপলাইন সম্প্রসারণের জন্য বিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রকল্প চলছে।
আমাদের এই প্রকল্পগুলোর প্রয়োজন নেই। এগুলো এই অঞ্চলে জলবায়ু সংকট এবং জ্বালানি সংকট সমাধানের পরিবর্তে আরও সমস্যা তৈরি করবে কারণ গ্যাস কয়লার মতোই ক্ষতিকর।
ডোন্ট গ্যাস এশিয়া ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা সরকার, ব্যাংক এবং করপোরেশনের কাছে এই বার্তা পাঠাচ্ছি, গ্যাস এবং অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানির সম্প্রসারণ বন্ধ করুন। ১০০ ভাগ নবায়নযোগ্য শক্তিতে রূপান্তর করুন।’
শরীফ জামিল বলেন, উন্নত দেশগুলো ইতোমধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতি নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গুরুত্বারোপ করছে। তারা বিভিন্ন বছরকে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে নির্ধারণ করে ঘোষণা দিয়েছে যে নির্ধারিত সময়ের পর তারা আর জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করবে না।
কিন্তু এই উন্নত দেশগুলোই আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে উন্নয়নের নামে জীবাশ্ম জ্বালানি দিয়ে এই জনপদের মানুষকে এক অপূরণীয় ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আজ এশিয়ার দশটি দেশে একসঙ্গে এই ডোন্ট গ্যাস এশিয়া ক্যাম্পেইনের পথচলা শুরু হলো।
শারমিন মুরশীদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করছে জীবাশ্ম জ্বালানি। সরকারকে বুঝতে হবে যত দ্রুত নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপরে বিনিয়োগ বাড়ানো হবে তত দ্রুত আমরা ধ্বংসের হাত থেকে এই দেশকে রক্ষা করতে পারবো।