টাঙ্গাইলে শালবন সমৃদ্ধির জন্য পশু-পাখির খাদ্য ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মধুপুর গড়াঞ্চলের দোখলা রেঞ্জে ৮০ হেক্টর বনভূমিতে দেশি ৫৩ প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করছে বন বিভাগ।
বন বিভাগের সুফল প্রজেক্টের আওতায় শালবনে পশু-পাখির নিরাপদ খাদ্য, লাল মাটির শালবনের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, দেশি প্রজাতির গাছের সমাহার ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য টেকসই এ মিশ্র বাগান করা হচ্ছে। এসব বৃক্ষ বেড়ে উঠলে শালবনের মানানসই পরিবেশসম্মত বৃক্ষের ফুল-ফলে ভরে উঠবে এ বন। সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, এতে বন তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুফল প্রজেক্টের আওতায় দোখলা রেঞ্জের ৮০ হেক্টর বনভূমিতে প্রতি হেক্টরে দেশি ৫৩ প্রজাতির এক হাজার ৫০০ করে মোট এক লাখ ২০হাজার গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে।
টেকসই বন ব্যবস্থাপনার আওতায় গর্জন, জাম, চাপালিশ, ঢেওয়া, লটকন, গাব, জামরুল, জলপাই, আমড়া, বেল, তেঁতুল, আমলকী, হরিতকী, বহেরা, অর্জুন, বকুল, মহুয়া, নাগেশ্বর, নিম, কাঠবাদাম, কাজু বাদাম, পেয়ারা, কানাইডিঙ্গা, জয়না, নেউর, চিকরাশি, আজুলী এবং ভেষজ গাছের মধ্যে তালমূল, তেজপাতা, সোনাপাতা, নাগদানা, জায়ফল, রক্ত চন্দনসহ দেশি ৫৩ প্রজাতির গাছের চারা গোবর ও মিশ্র সার দিয়ে রোপণের কার্যক্রম চালাচ্ছে দোখলা রেঞ্জ।
বন বিভাগের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ রেঞ্জে নার্সারী করে এসব গাছের চারার অঙ্কোরোদগম করা হয়।
দোখলা রেঞ্জ অফিসার আব্দুল আহাদ জানান, সুফল প্রজেক্টের আওতায় স্টেন্ড ইমপ্রুভমেন্ট শাল বন অ্যাসোসিয়েট অর্থাৎ শালবনের বিদ্যমান অবস্থা ঠিক রেখে বনের মধ্যে লাল মাটির এ বনের পরিবেশ ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ কারণে পরিবেশের সাথে মিল রেখে দেশি ৫৩ প্রজাতির ফুল, ফল, ভেষজ ও পরিবেশ সম্মত টেকসই বাগান তৈরি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. জহিরুল হক জানান, সাসটেইনেবল ফরেস্ট অ্যান্ড লাইভলিবোর্ট(সুফল) প্রজেক্টেও আওতায় দেশি জাতের চারা রোপণ করে বনের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০০৩ সালে হাতে নেওয়া এর পাইলট প্রজেক্ট সফল হওয়ায় দেশের বিভিন্ন বনে সুফল প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। টেকসই বাগান তৈরি করা হলে শালবনের পরিবেশ-প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্যের আদি সক্ষমতা ও ঐতিহ্য ফিরে আসবে। সূত্র: বিডি-প্রতিদিন