জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি গত দু তিন দিনের তুলনায় আরো অবনতি হয়েছে। বিভিন্ন নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিন নিত্য নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। এতে বন্যায় জেলার প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির আউশ, পাট, সবজি ও বাদামসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। বন্যায় এলাকার নলকূপগুলোও তলিয়ে গেছে। যার কারণে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট। এছাড়া প্রতিটি এলাকার সড়কগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
জানা যায়, জামালপুরের বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদসীমার ৭৭ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র, ঝিনাইসহ অন্যান্য শাখা নদীর পানিও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলার ৪২টি ইউনিয়নের তিন লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২ জুলাই ২০২০) জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান এ সকল তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, মাদারগঞ্জের সিঁধূলী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। পানি ঢুকে পড়ছে সদরের ব্রহ্মপুত্র নদ তীরবর্তী নিন্মাঞ্চলেও। এতে ৭ টি রউপজেলার ৪৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৪ লাখ মানুষের পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকার লোকজন। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে।
ফলে দুর্ভোগে পড়া বন্যা কবলিতদের জন্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, পুরো জেলার ৪২টি ইউনিয়নের চার শতাধিক গ্রামের তিন লাখ আট হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। বানভাসীদের জন্য ৬০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ছয় লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এসব ত্রাণ পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বন্যা সম্পর্কে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের আশঙ্কা, ভারতে যদি বন্যা হয় তবে বাংলাদেশে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হবে।