31 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ১১:৫৭ | ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
জলবায়ু মোকাবিলায় ধনীরা কি ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র দেশগুলোকে নগদ অর্থ দেবে
জলবায়ু

জলবায়ু মোকাবিলায় ধনীরা কি ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র দেশগুলোকে নগদ অর্থ দেবে

জলবায়ু মোকাবিলায় ধনীরা কি ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র দেশগুলোকে নগদ অর্থ দেবে

মিসরের শারম আল শাইখে জাতিসংঘের জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন কপ–এর ২৭ তম আসর শুরু হয়েছে গত রোববার (৬ নভেম্বর)। চলবে আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিপদগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কপের এবারের আসরের স্লোগান ঠিক করা হয়েছে ‘বাস্তবায়নে সবার অংশগ্রহণ’।

গত বছর গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ–২৬ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দরিদ্র দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্পর্কিত আলোচনার পথ বন্ধ করে দিয়েছিল ধনী দেশগুলো।

এ দিকে গত এক বছরে উন্নয়নশীল দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত নানা দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তানের ভয়াবহ বন্যা এবং পূর্ব আফ্রিকায় তীব্র খরা উল্লেখযোগ্য এবং ভীতিকর ঘটনা।

বাংলাদেশের সিলেটেও চলতি বছর দুই দফা বন্যা এবং সর্বশেষ উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে ত্রিশের বেশি প্রাণহানি, প্রচুর ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।



এসব কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে তহবিল গঠন সম্পর্কিত বিষয়গুলো আলোচনার টেবিলে খুব গুরুত্ব পাবে এবারের কপ সম্মেলনে।

দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর দাবি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো উন্নত দেশগুলো ‘জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট ক্ষয়ক্ষতির’ জন্য তাদের অর্থ বরাদ্দ দিক। তারা নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির জন্য অবকাঠামো নির্মাণের সুযোগ চায়।

এখন কথা হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশগুলোকে অর্থ কারা দেবে? এত দিন ধরে জলবায়ু খাতে কত অর্থ ব্যয় হয়েছে? কীভাবে সে অর্থ ব্যয় করা হয়েছে? সেগুলো একটু দেখে নেওয়া যাক।

তিনটি বড় খাতে জলবায়ু সংশ্লিষ্ট তহবিলগুলো খরচ হয়ে থাকে। প্রথমটি হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো এবং অন্যান্য দূষণকারী কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে।

অনেক দেশে এখনো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এ দেশগুলোর এখন সৌর বিদ্যুতের জন্য অবকাঠামো নির্মাণে আর্থিক সহায়তা দরকার।

দ্বিতীয়টি হলো—অভিযোজন। এর মানে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ প্রভাবগুলো মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকতে সহায়তা করা।

যেমন: শক্তিশালী বন্যা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নির্মাণ, ঝুঁকিতে থাকা জনসংখ্যার স্থানান্তর, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধক আবাসন উন্নয়ন ইত্যাদি।

তৃতীয়টি হলো সবচেয়ে বিতর্কিত খাত—লস অ্যান্ড ড্যামেজ। এই খাতের অর্থ ব্যয় হয় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ক্ষয়ক্ষতি সারিয়ে উঠতে সহায়তা করায়।



উন্নয়নশীল দেশগুলো এখন উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে নিশ্চিত ক্ষতিপূরণ চায়। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ঐতিহাসিকভাবে মূলত উন্নত দেশগুলোই দায়ী।

২০০৯ সালে ধনী দেশগুলো ২০২০ সালের শেষ নাগাদ জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ২০২০ সালের শেষ নাগাদ এ জন্য মাত্র ৮৩ বিলিয়ন ডলার পাওয়া গিয়েছিল। আশা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) বলছে, এই অর্থের ৮২ শতাংশ এসেছে সরকারি খাত থেকে। কিন্তু জাতিসংঘের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জলবায়ু সংশ্লিষ্ট প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের ৭০ শতাংশ বেসরকারি খাত সরবরাহ করতে পারে।

সেই ধারাবাহিকতায়, গত বছর ‘গ্লাসগো আর্থিক জোট’ নামে একটি জোট গঠিত হয়েছে। এখন ৫৫০ টিরও বেশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এই জোট ১৩০ ট্রিলিয়ন ডলারের তহবিল তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

কথা হচ্ছে, এসব তহবিল থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলো ঠিক কতটা সহায়তা পায়? এ ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলো বলছে, প্রতিশ্রুতির তুলনায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে খুবই কম।

কপ-২৬ সম্মেলনে চীনসহ জি-৭৭ ভুক্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর জোট ২০৩০ সালের মধ্যে ধনী দেশগুলোকে কমপক্ষে ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠনের আহ্বান জানায়। বিপরীতে ধনী দেশগুলো যুক্তি দিয়েছিল যে, এই অর্থ কার্বন নির্গমন হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য সমানভাবে খরচ করা উচিত।



অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সহায়তা করে জলবায়ু অর্থায়নের মাত্র ৩৪ শতাংশ।

এ ছাড়া ৭১ শতাংশ অর্থ এখনো সরাসরি অনুদানের পরিবর্তে দেশগুলোকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়। এতে দরিদ্র দেশগুলোর ঋণের বোঝা বাড়তে পারে। এটিকে গুরুতর অন্যায় বলে আখ্যা দিয়েছেন অক্সফামের ইন্টারন্যাশনাল ক্লাইমেট পলিসির প্রধান নাফকোতে দাবি।

কপ–২৭ সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট সামেহ শুকরি উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিপদগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি আলোচনার তালিকায় রাখার মানে হলো, বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতি সংহতি প্রকাশ করা।’

অবশ্য যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এবারে সম্মেলনকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার তাগিদ দিচ্ছেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের ইস্যুটি ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেই জ্বালানি নিরাপত্তার ইস্যুটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে মত দিয়েছেন তাঁরা। কারণ জলবায়ু এবং জ্বালানি নিরাপত্তা হাত ধরাধরি করে চলে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত