উন্নত দেশগুলোতে বিদ্যমান কার্বন করের মাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমেই বায়ুদূষণ কমানোর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সবচেয়ে কার্যকর ও শক্তিশালী উদ্যোগ নেয়া সম্ভব। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফ প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমন সুপারিশই করা হয়েছে।
কার্বন করের মাত্রা বৃদ্ধি করার কৌশলটি অবশ্য নতুন কিছুই নয়। বিগত কয়েক দশক ধরেই এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক চলছে। অধিকাংশ উন্নত দেশের সরকার এবং বাণিজ্যিক সংগঠনগুলো এই ধারণার তীব্র বিরোধী, কেননা এর ফলে উন্নত বিশ্বের নাগরিকদের ওপর সার্বিক করের বোঝা বাড়বে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির গতির জন্যেও এমন পরামর্শ নেতিবাচক। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পৃথিবীজুড়ে চরমাভাবাপন্ন আবহাওয়া এবং আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে কমবেশি সকল দেশই ক্ষতির মুখে পড়ছে। অনেক উন্নত দেশের সরকারও এখন কার্বন কর বৃদ্ধির কথা ভাবছে। এই অবস্থাতেই আইএমএফ কার্বন কর বাড়ানোর ওপর নতুন করে গুরুত্ব আরোপ করলো।
প্রতিবেদনে প্রকাশ, একটা সময় ছিলো যখন প্রচলিত জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার থেকে সরে আসলে বিশ্বে বিদ্যুতের দাম বাড়বে, এমন ভোঁতা যুক্তি দেয়া হতো। কিন্তু, এখন নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রযুক্তির উন্নতমান এবং খরচ কমে আসার প্রেক্ষিতে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের যুক্তি বাতিল করে দেয়া চলে। বিদ্যমান জ্বালানি নির্ভরতার অনেকটাই এখন নবায়নযোগ্য উৎস পূরণের সক্ষমতা রাখে। এখন বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিবিদেরাই বরং প্রচলিত জ্বালানি থেকে সরে এসে পৃথিবীকে রক্ষা করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাদের অভিমত, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি মোকাবেলা করার চাইতে বরং সেটা ঠেকানোর জন্য অধিক কার্বন কর দেয়া বেশি লাভজনক।
আইএমএফ- এর ফিসক্যাল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের উপপরিচালক পাওলো মাওরো বলেন, বার্ষিক এই প্রতিবেদনে আলোচিত কৌশলকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ উপায় মনে করছি। দূষণযুক্ত শিল্পে বাড়তি করারোপের উদ্দেশ্য সরকারগুলোর বার্ষিক বাজেটে নতুন নীতিমালা সংযোজনের অবকাশ আছে।