গত কয়েক বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশে বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তার মধ্যে ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস, বন্যা অন্যতম।প্রায় প্রতিবছরই এই দুর্যোগগুলোর করাগ্রাসে ধ্বংস হয় অসংখ্য বসতভিটা,নষ্ট হয় শস্য জমি।ফলে এর প্রভাবে প্রতিবছরই মানুষ তার বসতভিটা ও শস্য জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে।
যদি প্রতিবছর দুর্যোগ এভাবে বাড়তে থাকে তবে আগামী ২০ বছরের মধ্যে ১ কোটি মানুষ ঢাকা শহরে স্থানান্তরিত হবে । এ জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে কার্যকর যুগোপযোগী উদ্যোগ নিতে হবে। যার জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও গবেষণা। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাড়াতে হবে সরকারি ও বেসরকারি খাতে মনিটরিং দক্ষতা ।
রবিবার রাজধানীর কাওরান বাজারে ‘দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে’ অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ জলবায়ু বাজেট ২০১৯-২০ অর্থবছর : সুশীল সমাজ সংস্থার বিশ্লেষণ ও প্রতিফলন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা আলোচনা করা হয়। আলোচনায় গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ বিষয়ে বাজেট বাড়ানোর কথা উল্লেখ করা হয়।জলবায়ু বাজেটের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লিড অব রিসাইলিয়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট জাস্টিস প্রোগ্রামের তানজির হোসাইন ও প্রোগ্রাম অফিসার সৈয়দা লামিয়া হোসাইন।
‘জলবায়ু বাজেট’ বিষয়ে আলোচনা করেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ড. ছলিমুল হক। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সচেতনতার দিক থেকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এটা প্রশংসনীয়।
জলবায়ু পরিবর্তন খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শে তিন বলেন,“পানির পরিবর্তন মানেই জলবায়ুর পরিবর্তন। জলবায়ুর পরিবর্তন হলে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।জলবায়ু পরিবর্তন কোনটি সবাইকে বুঝতে হবে। গরম-বৃষ্টি বাড়লেই জলবায়ু পরিবর্তন বোঝায় না। এটা গবেষকদের কাছ থেকে জানতে হবে। সবার দায়িত্ব রয়েছে এটা বোঝার। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘বছরের পর বছর সরকার বাজেটে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বরাদ্দ বাড়াচ্ছে। তবে আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা ১০০ মিটার যেতে চাইলে ৫০ মিটার যেতে পারি। গত বছর ১৯ জেলায় বন্যা হয়েছিল কিন্তু এ বছর ২৮ জেলায় বন্যা হয়েছে। আমরা আমাদের কার্যক্রম বাড়াচ্ছি, অন্যদিকে জলবায়ু বিপর্যয়ের বিষয়টিও কিন্তু থেমে নেই।’
স্বাগত বক্তব্যে অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব মোকাবিলায় যে বাজেট রাখা হয়, সেটা সংকট উত্তরণে কতটুকু ভূমিকা রাখবে, তা নিয়ে ভাবা দরকার।’
জবাবদিহিতা বাড়াতে একটি যৌথ মনিটরিং টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি।এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এ টাস্কফোর্সে সরকারি কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি খাত অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এতে এ খাতের উন্নয়ন
টেকসই ও অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হবে।’