জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ১০০ কোটি ডলার দেবে নেসলে
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো নানা ধরনের পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। পিছিয়ে নেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় কফি উত্পাদক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান নেসলেও। ২০৩০ সালের মধ্যে জলবায়ু খাতে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে নেসলে।
প্রতিষ্ঠানটির কফি ব্র্যান্ড চাষীদের আরো টেকসই উত্পাদন পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও আবহাওয়াসহিষ্ণু কফি উত্পাদনে এ অর্থ ব্যয় করা হবে।
কফি চাষীদের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে নেসলে। এর মধ্যে রয়েছে ফসল চাষের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি শেখাতে প্রশিক্ষণ দেয়া, খামারিদের জন্য নগদ প্রণোদনা দেয়া যাতে করে তারা জলবায়ুবান্ধব চাষে উত্সাহী হয়।
যেমন জমির মাটির সুরক্ষায় কফিগাছের চারা ঢেকে রাখা ইত্যাদি। এ মুহূর্তে বিশ্বের ৫ লাখের বেশি চাষী নেসলের জন্য কফি চাষ করে থাকেন। নেসলের প্রত্যাশা এ সংখ্যা দ্বিগুণ করা। আর সেটি সম্ভব না হলেও আপাতত সরবরাহকারীর সংখ্যা অন্তত ২ লাখ বাড়ানো।
কারণ কফি বীজের সরবরাহে পড়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব। এ ফসলটি সবচেয়ে ভালো জন্মে নিরক্ষীয় অঞ্চলে। যে অঞ্চলটি খরা ও ঘুর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য সবচেয়ে বেশি হুমকির মধ্যে থাকে।
ইন্টার-আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, কফি চাষের উপযোগী অঞ্চলটিতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমেই বাড়ছে তাপমাত্রা। ফলে এটি কফি চাষের উপযোগিতা হারাচ্ছে।
২০৫০ সাল নাগাদ কফি চাষের উপযোগিতা কমে যাবে অন্তত ৫০ শতাংশ। আবার ২০২১ সালে ব্রাজিলে তীব্র তুষাপাত হয়েছে, যা কফি চাষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ অবস্থা চলতি বছরও দেখা যাবে।
নেসলের কফি বিজনেসের প্রধান ডেভিড রেনি বলেন, এখনই যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া যায় তাহলে আগামী ২০ থেকে ৩০ বছর পর আর কার্যকর কফি খামার পাওয়া যাবে না। সে কারণেই নেসক্যাফে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে কফি চাষে প্রচেষ্টা বাড়ানো হচ্ছে।
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাষীদের মাটির উর্বরতা ও মান বাড়ানোর পদ্ধতি শেখানো হচ্ছে। কীভাবে ফসল উত্পাদন বাড়ানো যায় ও যথাযথভাবে পানির ব্যবহার বাড়ানো যায় সেসব বিষয় আলোচনা করা হচ্ছে।
নেসলের লক্ষ্য হলো ২০২৫ সালের মধ্যে নেসকফির এক পঞ্চমাংসকে আধুনিক কফি চাষের আওতায় নিয়ে আসা। ২০৩০ সালের মধ্যে অর্ধেক কফি আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করা।
এ পদ্ধতির আওতায় রয়েছে বালাইমুক্ত ও জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল জাতের উদ্ভাবন ও তার চাষ। যার মাধ্যমে কৃষকের উত্পাদন এবং চাষে আগ্রহ বাড়বে।