জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে ঝিনাইদহে খরায় ফেটে চৌচির আমন ক্ষেত
ঝিনাইদহে দেখা নেই বৃষ্টির, তপ্ত রোদে ফেটে চৌচির আমনের ক্ষেত। একইভাবে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে আমন খেত।
এ অবস্থায় বৈদ্যুতিক মোটর কিংবা ইঞ্জিনচালিত পাম্পে জমিতে সেচ দিতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। এছাড়া সেচ দেওয়া পানিও জমিতে বেশিক্ষণ থাকছে না। এমন পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
চলতি মৌসুমে জেলায় আমন আবাদ হয়েছে এক লাখ তিন হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিতে। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ চার হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার বাকি জমিতে পাট থাকার কারণে আবাদে দেরি হচ্ছে বলে জানায় জেলা কৃষি বিভাগ।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, পানির অভাবে ফসলের জমিগুলো ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। এতে অনেক জমির ধান মরে যাচ্ছে। অনেক কৃষক ধান বাঁচাতে জমিতে সেচ দিচ্ছেন। আর প্রতিবার সেচ দিতে বিঘাপ্রতি গুনতে হচ্ছে এক হাজার টাকা।
উদয়পুর গ্রামের কৃষক মো. আকাশ বলেন, পানির অভাবে জমি ফেটে চৌচির। ধান লাগানো প্রায় এক মাস হয়ে গেছে, এখনো কোনো উন্নতি নেই। আর জমিতে দেওয়ার জন্য সার তো পাওয়াই যাচ্ছে না। বাজারে সার আনতে গেলে বলছে সার নেই, আবার বেশি টাকা দিলে সার পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সাত বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। এখন সব ধান মরে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে ধানের জমি চাষ দিয়ে অন্য আবাদ করি।
আরেক কৃষক বলেন, ধান লাগানোর পরে পানির অভাবে সার দিতে পারিনি। ধানের জমি সব ফেটে গেছে। আর বৃষ্টি না হলে সেচ দিয়ে ধানের আবাদ করলে তেমন লাভ হয় না। ফলনও আশানুরূপ হয় না। তারপরও বাধ্য হয়ে আমরা পানি সেচ দিচ্ছি।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুল করিম বলেন, বর্তমান আমাদের এখানে আমন ধান রোপণ প্রায় শেষ বলা যায়। এবছর আবহাওয়ার পরিবর্তন দৃশ্যমান। আষাঢ়-শ্রাবণ চলে গিয়ে ভাদ্র মাস চলছে কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই।
তিনি আরও বলেন, কৃষকদের জমি ফেটে যাচ্ছে। তারা মেশিন দিয়ে সেচ দিচ্ছে। সেচের সঙ্গে বৃষ্টির খুব প্রয়োজন। বৃষ্টি পেলে ধানের আবাদ ভালো হবে। তারপরও সেচের মাধ্যমে যতটুকু সম্ভব ধান উৎপাদন এগিয়ে নেওয়া যায় সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।