জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবে পানির সংকটে ভুগছে রাজস্থানের লাখো মানুষ
প্রবল তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত ভারতের মরুরাজ্য রাজস্থান। এখানে তাপমাত্রা প্রায় ৪৫ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। অনেকটা নেমে গেছে পানির স্তর। যোধপুরের প্রায় ১৬ লাখ মানুষের পানির জন্য হাহাকার।
এ মানুষগুলোর পানির চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ করে বিশেষ একটি ট্রেন। জলবায়ুর এ পরিবর্তন ভারতের প্রায় ১৪০ কোটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে।
গত ৩ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে রাজস্থানের লাখ লাখ মানুষের জন্য পানি নিয়ে আসে ওয়াগন ট্রেন। এটিই এখন জেলার মানুষের একমাত্র পানির উৎস। ট্রেনের অপেক্ষায় প্রতিদিনই বালতি, কলসি আর বিবিধ পাত্র হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানায়, এখানে সবসময় গরম থাকে। আমরা প্রতিনিয়ত পানির জন্য সংগ্রাম করে আসছি। প্রতিদিন জড়ো হওয়া লোকেরা (অধিকাংশই নারী এবং শিশু) প্লাস্টিকের জার, ক্যান কিংবা ধাতব পাত্র নিয়ে অপেক্ষায় থাকে কখন ট্রেন আসবে।
আর্মি-সবুজ রঙের ট্রেন থেকে পানি পেলে তবে তাদের ভূগর্ভস্থ ট্যাংকে নিয়ে ঢালে বাসিন্দারা। বাড়িতে পানি আছে কিনা, তা নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় পরিবারগুলোর শিশু-কিশোররা স্কুল এড়াতে বাধ্য হয়। আর এটাই তাদের জীবনের বড় আঘাত।
স্থানীয় অন্য এক বাসিন্দা জানায়, আমি পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে এ কাজে সাহায্য করতে বলতে পারি না। কর্তা খাবারের জন্য এবং আমরা পানির জন্য সংগ্রাম ভাগাভাগি করছি। যদিও আমার সন্তানের শিক্ষার ওপর খারাপ প্রভাব পড়ছে। কিন্তু কী করব? আমি নিজে এসব পাত্র বহন করতে পারি না। আমরা আসলে পরিস্থিতির শিকার।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ার লাখ লাখ মানুষ গ্রীষ্মের প্রথম দিকেই তাপপ্রবাহের আগুনে পুড়ছে। উষ্ণতম মার্চের রেকর্ড হয়েছে ভারতে। সম্প্রতি আন্তঃসরকারি প্যানেল অন ক্লাইমেট চেইঞ্জ (IPCC) ল্যান্ডমার্ক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানে দীর্ঘ সময়কালের জন্য আরো তীব্র তাপদাহে ভুগতে পারে।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহের শূন্যতা পূরণের অংশ হিসেবে গত সোমবার গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। প্রচণ্ড তাপদাহে ভারতের কৃষিব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বছর গমের উৎপাদনও কম হয়েছে। আগেভাগে সাবধান হতেই ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে।