জরিমানা করেও ইট পোড়ানো বন্ধ হয়নি অবৈধ ভাটায়
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার জোলাগাতি গ্রামে একটি ইটভাটায় ড্রাম চিমনি ব্যবহার করে সনাতন পদ্ধতিতে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স না নিয়ে দুই বছর ধরে ভাটাটিতে ইট পোড়াচ্ছেন জসিম খান নামের এক ব্যক্তি। চলতি বছর পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন দুই দফা অভিযান চালিয়ে ভাটা মালিককে জরিমানা করার পরেও পুনরায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন ২০১৯ অনুযায়ী, ড্রাম চিমনির পরিবর্তে জিগজ্যাগ ও উন্নত প্রযুক্তির চিমনি ব্যবহার করে ইটভাটা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স ছাড়া ইট ভাটা তৈরি করা হলে জেল ও জরিমানার বিধান রয়েছে আইনে।
উপজেলার জোলাগাতি গ্রামে কচা নদীর কাছে ফসলি জমিতে ভাটায় ইট তৈরি করেছেন জসিম খানের কর্মীরা। জসিম খান নদীর চর ও সাউথের খালের তীর থেকে মাটি কেটে ইট তৈরি করছেন। ভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে সনাতন পদ্ধতির ড্রাম চিমনি। কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইট ভাটাটি দূরবর্তী এলাকায় হওয়ায় প্রশাসনের লোকজন সেখানে যান না। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৭ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরিন হক ভাটায় অভিযান চালান।
এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত ড্রাম চিমনি ভেঙে দেন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ব্যতীত ভাটা করায় ইটভাটার মালিক জসিম খানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। এর কয়েক দিন পর জসিম খান পুনরায় সেখানে কাঠ দিয়ে ড্রাম চিমনি ব্যবহার করে ইট পোড়ানো শুরু করেন।
এরপর স্থানীয় লোকজন জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন। ১ মার্চ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরান খানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এসময় ভাটা মালিকের লাইসেন্স না থাকায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভাটাটি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরও সেখানে ইট পোড়ানো হচ্ছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর আল ইমরান খান বলেন, ‘ইটভাটাটি দুর্গম এলাকায় হওয়ায় সেখানে অভিযান চালাতে অনেক সময় লেগে যায়। আমরা একবার সেখানে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছি। এবার ভাটাটি ভেকু দিয়ে ভেঙে দেব।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল কার্যালয়ের পরিচালক আব্দুল হালিম বলেন, একবার জরিমানা করে ড্রাম চিমনি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। পরে সেখানে আবার ড্রাম চিমনি স্থাপন করা হয়েছে।
ভাটাটি বন্ধ করার জন্য মালিককে নোটিশ পাঠানো হবে। কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. খালেদা খাতুন বলেন, অবৈধ ইট ভাটাটি ধ্বংস করা হবে। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।