25 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
ভোর ৫:২০ | ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
জনসচেতনতার মাধ্যমে নদী দূষণমুক্ত করতে হবে
পরিবেশ রক্ষা

জনসচেতনতার মাধ্যমে নদী দূষণমুক্ত করতে হবে

জনসচেতনতার মাধ্যমে নদী দূষণমুক্ত করতে হবে

মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়া বুড়িগঙ্গা নদীর পানি ছড়িয়ে পড়ছে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, আড়িয়াল খাঁ, ধলেশ্বরী ও শীতলক্ষ্যাসহ ধারে-কাছের সব নদনদীতে। এ দূষিত পানি নদনদী হয়ে গিয়ে পড়ছে বঙ্গোপসাগরে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ অবস্থা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে অন্য নদনদীর পানিও বুড়িগঙ্গার মতোই ভয়াবহ দূষণের কবলে পড়বে। রাজধানীর প্রধান নদী বুড়িগঙ্গা বর্জ্য ফেলার ভাগাড় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে অন্তত সাত-আট দশক ধরে।

দুই তীরে গড়ে ওঠা সব কলকারখানার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে। বুড়িগঙ্গার দূষণ এখন আর এ নদীতে সীমাবদ্ধ নেই। তা ছড়িয়ে পড়ছে চাঁদপুর অঞ্চলের পদ্মা, মেঘনার মোহনায়ও। ধারে-কাছের আড়িয়াল খাঁ, গোমতী, ধলেশ্বরী আর শীতলক্ষ্যার বিভিন্ন প্রান্তে অনুভূত হচ্ছে দূষণের থাবা।

দখল আর দূষণের ফলে তুরাগ এখন একটি মরা নদ। দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকায় যাদের পোষা হয় তাদের নির্বিকার ভূমিকা নদী দূষণ ও দখলে মদদ জোগাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত মেঘনাকে বলা হয় দুনিয়ার শীর্ষস্থানীয় স্বচ্ছ পানির নদী। এক সময় বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার পানি পানোপযোগী ভাবা হতো।



কিন্তু প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নিস্পৃহতায় বুড়িগঙ্গা বিশ্বের শীর্ষ দূষিত নদীতে পরিণত হয়েছে। একই অবস্থা তুরাগ ও শীতলক্ষ্যার।

নদী যে একটি বিশেষ প্রাকৃতিক সম্পদ, বাংলাদেশের জনপ্রশাসনে এ বিষয়ে যথেষ্ট অজ্ঞতা এবং অসচেতনতা লক্ষ করা যায়। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট এবং ইংল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্ট বহুকাল আগেই ওই জাস্টিনিয়ান কোডের ভিত্তিতে নদীসংক্রান্ত অনেক ‘বৈধ কাগজপত্র’ বাতিল করে নদী দখলকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়েছেন।

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নদী দখলকারী মন্ত্রীদের জরিমানা করে সেই রায় সমর্থন করেছেন। বাংলাদেশে যেভাবে ব্যাপক ভিত্তিতে নদী দখল ও নদীদূষণ চলছে, তাতে দখল বা দূষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এটা দুঃখজনক যে, নদী বা জলাশয় সুরক্ষায় সরকার বা সংসদগুলোর তেমন কোনো সংবেদনশীলতা দেখা যায় না।

তবে বিলম্বে হলেও হাইকোর্টের কতিপয় নতুন নির্দেশনার ভিত্তিতে আমরা নতুন সংসদ ও সরকারের কাছে একটা জাগরণ আশা করতে পারি। হাইকোর্ট নদী দখলকারীদের সব ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং ব্যাংকঋণ পেতে অযোগ্য ঘোষণা করেছে।

এখন বড় প্রশ্ন দাঁড়াবে নদী দখলকারী কে বা কারা? এই রকম তালিকা তৈরির উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কে হবে? ঋণখেলাপিদের ক্ষেত্রে আমরা বৈষম্য দেখেছি। আমরা আশা করব, নদী দখলকারীরা যাতে সত্যিই শাস্তির অংশ হিসেবে কিছু অধিকার ভোগ থেকে বঞ্চিত হয়।

আদালতের নির্দেশনায় অনেক নতুন বিষয় এসেছে, যা জাতীয় সংসদে বিস্তারিত আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত হওয়া দরকার।



আদালত তুরাগ নদকে লিগ্যাল পারসন ও জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এই ধারণা বাংলাদেশেই যে প্রথম তাই নয়, এটা বিশ্বেও বিরল।

হাইকোর্টের দুটি নির্দেশনার আলোকে আমরা অবিলম্বে কিছু পদক্ষেপের বাস্তবায়নকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। ঢাকার চারটি নদীর মধ্যে এ পর্যন্ত কেবল বুড়িগঙ্গার সীমানা চিহ্নিতকরণ, খুঁটি স্থাপন এবং হাঁটার পথ তৈরি সম্পন্ন হয়েছে। বাকি তিনটি নদীরই এসব কাজ বহুলাংশে বাকি।

নদী খননের অগ্রগতিও হতাশাব্যঞ্জক। আপাতত সবার আগে সীমানা নির্ধারণী খুঁটি স্থাপনকাজ শেষ হোক। কারণ এই একটি কাজই দখলকারীদের রুখতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

দূষণের ভয়াল থাবা থামাতে না পারলে দেশের অনেক নদনদী দূষণের শিকার হবে। নদনদীসহ প্রাকৃতিক সব জলাধার সুরক্ষায় ট্যাক্সের টাকায় লাটসাহেব পোষার চেয়ে শেষ ভরসা হিসেবে জনসচেতনতা গড়ে তোলার দিকে বেশি নজর দিতে হবে।

বিশেষ করে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নদনদী দখল-দূষণের বিরুদ্ধে সক্রিয় করার কথা ভাবা যেতে পারে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত