30 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৩:১২ | ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
চুল্লির ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ
পরিবেশ দূষণ

চুল্লির ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ

চুল্লির ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার নরোত্তমপুর গ্রামে আটটি চুল্লিতে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে। এসব চুল্লি থেকে কালো ধোঁয়া বের হয়। চারদিকে গাঢ় সবুজ প্রকৃতি।

এর মধ্যে ফসলি জমি ঘেঁষে তৈরি করা অর্ধগোলাকার বড় বড় আটটি চুল্লি থেকে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এই ধোঁয়া থেকে পাওয়া যাচ্ছে অসহনীয় দুর্গন্ধ। চুলার পাশে পোড়ানোর অপেক্ষায় স্তূপ করে রাখা কয়েক শ মণ কাঠ। সম্প্রতি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের নরোত্তমপুর গ্রামে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে।

নরোত্তমপুর গ্রামের কয়েকজন বলেন, সাত থেকে আট মাস ধরে আটটি বিশাল আকারের চুলায় রাত-দিন চলে কাঠ পোড়ানোর কাজ। শুধু পরিবেশের ক্ষতি নয়, স্থানীয় বাসিন্দারা ফসল উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কায় এ ধরনের উন্মুক্ত চুল্লি বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতা চান। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ অবৈধ বলে মত দিয়েছেন।



স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নরোত্তমপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের জমিতে এসব চুলা স্থাপন করা হয়েছে। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি গ্রামের আবদুস সাত্তার চুল্লিগুলো স্থাপন করেন।

জমির ভাড়া বাবদ তিনি রফিকুল ইসলামকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা দিচ্ছেন। এসব চুল্লির ব্যাস ৭ -১০ ফুট। ভূমি থেকে উচ্চতা গড়ে ৮-১০ ফুট। চুল্লিগুলো মাটির গভীরে দুই-তিন ফুট করে খনন করা হয়েছে।

ইটের তৈরি এসব চুল্লিতে দুই থেকে আড়াই শ মণ কাঠ ঢোকানো হয়। এরপর আগুন দিয়ে টানা ৮–১০ দিন কাঠ পোড়ানো হয়। এরপর সেগুলো থেকে কয়লা বের করে ঠান্ডা করে বিক্রির উপযোগী করা হয়।

এসব কয়লা বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁয় বিক্রি করা হয়‌। এ ছাড়া সুপারশপেও বর্তমানে প্যাকেটজাত কাঠকয়লা পাওয়া। এগুলো এ ধরনের চুল্লি থেকে সংগ্রহ করা হয়। তা ছাড়া কিছু ইটভাটায়ও যায় এসব কয়লা। এসব কয়লার একেকটি মাঝারি বস্তা ৩০০–৫০০ টাকায় বিক্রি হয়।

এসব চুল্লির ব্যাস ৭ -১০ ফুট। ভূমি থেকে চুল্লিগুলোর উচ্চতা গড়ে ৮-১০ ফুট। চুল্লিগুলো মাটির গভীরে ২-৩ ফুট করে খনন করা হয়েছে।

এসব চুল্লি থেকে বের হওয়া ধোঁয়ায় পরিবেশের ক্ষতির কথা উল্লেখ করে নরোত্তমপুর গ্রামের কয়েকজন বলেন, কাঠ পোড়ানোর এসব চুল্লির আশপাশে শতাধিক ঘরবাড়ি আছে। চুল্লির অদূরে আছে বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও মসজিদ।

তাঁরা জানান, লোক দেখানোর জন্য কিছু কাঠ বৈধভাবে কেনা হয়। তবে বেশির ভাগই চোরাই কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিনে আনা হয়। এতে আশপাশের বনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া ধোঁয়ার কারণে স্থানীয় লোকজন শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।



নরোত্তমপুর গ্রামের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক মো. আমানুল্লাহ বলেন, চুল্লি থেকে যে পরিমাণ ধোঁয়া নির্গত হয়, তাতে সবুজ পরিবেশ টিকবে বলে মনে হয় না। তিনি আরও বলেন, ধোঁয়ার ফলে আশপাশের এলাকা থেকে নানা জাতের পাখি চলে গেছে। এসব ধোঁয়ায় গাছপালাসহ পশুপাখির ক্ষতি হচ্ছে।

একই গ্রামের অজিল্লুর রহমান বলেন, এসব চুল্লিতে অবাধে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির ব্যবসা এর আগে আর কোথাও দেখেননি তাঁরা। তাই এটা বৈধ নাকি অবৈধ, তাঁরা জানেন না। এতে পরিবেশের ও মানুষের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) গাজীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসান ইউসুফ বলেন, এভাবে কাঠ পোড়ানো শুধু পরিবেশের জন্য নয়, মানুষের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। অতি দ্রুত ওই চুল্লি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর গাজীপুরের উপপরিচালক মো. নয়ন মিয়া বলেন, ‘এভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই ধরনের কাজে আমরা অনুমতি দিই না। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে এসব পোড়ানো হচ্ছে। এগুলো বন্ধে শিগগিরই অভিযান চালাব।’

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত