34 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
দুপুর ১:৪৫ | ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
গুরুত্ব হারাচ্ছে কপ সম্মেলন
জলবায়ু

গুরুত্ব হারাচ্ছে কপ সম্মেলন

গুরুত্ব হারাচ্ছে কপ সম্মেলন

২০২২ সালের কপ-২৭ সম্মেলনে ‘সম্মিলিত আত্মহত্যা নাকি একসঙ্গে লড়াই’ শিরোনামে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেছেন, যুদ্ধে যত মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়, তার চেয়ে তিন গুণ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে।

আগামী বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা পরিবেশ বিপর্যয়। সারাবিশ্বের বিজ্ঞানীরা একবিংশ শতাব্দীতে যে সমস্যা নিয়ে একমত হয়েছেন, তা হলো জলবায়ু পরিবর্তন। এক সময় গুহায় বসবাসরত অবস্থায় মানুষ বনের হিংস্র প্রাণীর সঙ্গে লড়াই করেছে, প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করেছে।

প্রতিনিয়ত মানুষ প্রকৃতিকে শাসন করেছে বসবাসের স্বাচ্ছন্দ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে। ধীরে ধীরে প্রকৃতি শাসনের নমুনা এতটাই ভয়াবহ পর্যায়ে যাচ্ছে, বর্তমানে বসবাসের স্বাচ্ছন্দ্যই হবে আগামীর দুর্বিষহতা। বর্তমানে তাপদাহ, দাবানল, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো বিষয় চরমভাবে দৃশ্যমান।



জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৯৯৫ সালে কপের প্রথম সম্মেলন হয় জার্মানির বার্লিনে। একে একে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা, জাপানের কিওটো, নেদারল্যান্ডসের হেগসহ নানা শহরে ইতোমধ্যে ২৬টি সম্মেলন শেষ হয়েছে।

গ্লাসগোর কপ-২৬ সম্মেলনে বেশ কিছু প্রতিশ্রুতির মধ্যে ছিল- ক্রমে কয়লার ব্যবহার কমানো, ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় বন্ধ, মিথেন গ্যাস নিঃসরণ ৩০ শতাংশ কমানো, জাতিসংঘে নতুন জলবায়ু কর্মসূচি পরিকল্পনা জমা দেওয়া। এবারের জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক ২৭তম সম্মেলন হয়েছে মিসরের শার্ম আল-শেখ নগরীতে।

এ বছরের জাতিসংঘ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনের পর বিশ্বের দেশগুলোর সরকারের কার্বন নিঃসরণ কমানোর পরিকল্পনায় দুঃখজনকভাবে পর্যাপ্ত অগ্রগতি হয়নি।

গত কয়েক মাসে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত আবহাওয়া বিপর্যয়ে বন্যা ও ভূমিধসে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। বাংলাদেশ, নাইজেরিয়ায় ব্যাপক বন্যা, আফ্রিকা ও যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র খরা, ক্যারিবীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় এবং তিন মহাদেশজুড়ে নজিরবিহীন তাপপ্রবাহ বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।



বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। এমন পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়, সে জন্য ২০১৫ সালে ঐতিহাসিক প্যারিস চুক্তি সম্পন্ন হয়। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবিলা ও গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে তখনই প্রথমবারের মতো বিশ্বের দেশগুলো একটি চুক্তিতে পৌঁছে।

সে চুক্তি থেকে বিজ্ঞানীরা মত দেন, প্রাক-শিল্পায়ন যুগের তুলনায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা গেলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়কর প্রভাব এড়ানো যাবে। ইতোমধ্যে ২৭টি সম্মেলন শেষ হলেও চুক্তি বাস্তবায়ন এবং কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ হ্রাসের বিষয়টি খুবই হতাশাজনক।

আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জার্মান ওয়াচের ২০১০-এ প্রকাশিত গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্সে বলা হয়েছিল, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতির বিচারে শীর্ষ ১০টি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে প্রথমদিকে অবস্থান করছে বাংলাদেশ।

এ সমীক্ষা চালানো হয় ১৯৯০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ১৯৩টি দেশের ওপর। বাংলাদেশ প্রতি বছর কোনো না কোনো বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, জলোচ্ছ্বাস, টর্নেডো, ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের সম্মুখীন।

অতি সম্প্রতি আমরা সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে অকালবন্যা হতে দেখেছি। এ বন্যায় হাওরাঞ্চলের ফসল বিশেষ করে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সাধারণত কপ সম্মেলনের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আর্থিক সহায়তা বিষয়ে জোরালোভাবে দাবি উপস্থাপন করা যায়। ২০১৫ সালে ঐতিহাসিক প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন এখনও দৃশ্যমান নয়।



২০২৫ সাল পর্যন্ত ক্ষতির শিকার দেশগুলোর জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তবে বরাবরই উন্নয়নশীল দেশগুলো আর্থিক সহায়তার বিষয়টি গুরুত্ব দিলেও উন্নত দেশগুলোর পদক্ষেপ খুব একটা দৃশ্যমান নয়।

এ বছর কপ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ভারত, ব্রাজিল, মেক্সিকোসহ অনেক দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের অনুপস্থিতি কি আমাদের এই বার্তা দিচ্ছে- কপ সম্মেলনের গুরুত্ব ক্রমহ্রাসের দিকে

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত