ক্রমশ সমুদ্রে তলিয়ে যাচ্ছে মুম্বই
গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কালো ছায়া ক্রমেই ঘনিয়ে আসছে সভ্যতার উপরে। দ্রুত হারে গলছে মেরুদেশের বরফ। এবার বিশেষজ্ঞরা জানালেন, প্রতি বছর একটু একটু করে ডুবে যাচ্ছে বিশ্বের বহু গুরুত্বপূর্ণ শহর।
আর সেই তালিকায় রয়েছে ভারতের বাণিজ্যনগরী মুম্বইও । গবেষকরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর গড়ে ২ মিমি করে ডুবছে মহারাষ্ট্রের রাজধানী।
‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’ নামের এক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, “জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের সপ্তম শহর মুম্বই।
এখানে বাস করেন প্রায় ২ কোটি মানুষ। শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ দ্রুত ডুবে যাচ্ছে। বছরে ২ মিমি করে।”
গবেষকরা জানাচ্ছেন, ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে মুম্বই থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে এমনই ইঙ্গিত মিলছে।
গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, মোট ৯৯টি শহরের উপরে এই গবেষণা চালানো হয়েছে। দেখা গিয়েছে, মুম্বইয়ের থেকে অনেক বেশি ভয়ংকর অবস্থা চিনের তিয়ানজিনের।
প্রতি বছর ৫.২ সেন্টিমিটার করে জলের তলায় চলে যাচ্ছে ওই শহরটি। তালিকার উপর দিকেই রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা (বার্ষিক ৩.৪৪ সেন্টিমিটার), চিনের সাংহাই (বার্ষিক ২.৯৪ সেন্টিমিটার), ভিয়েতনামের হো চি মিন (বার্ষিক ২.৮১ মিলিমিটার) ও হানোই (বার্ষিক ২.৪৪ মিলিমিটার)- এই শহরগুলি।
প্রসঙ্গত, গত বছর রাষ্ট্রসংঘের (UN) আবহাওয়া পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যানেল IPCC জানিয়েছিল, আগামী দিনে ভারত-সহ দক্ষিণ এশিয়ার আবহাওয়া নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, বর্ষার সময়সীমা বাড়বে।
সেই সঙ্গে বিশ্ব জুড়ে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে সৃষ্টি হবে খরা। সব মিলিয়ে তাঁদের ভবিষ্যদ্বাণী, দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষত ভারতীয় উপমহাদেশে তাপপ্রবাহের মাত্রা আরও বাড়বে আগামিদিনে। কমবে শীতকালের আয়ু। সেই সঙ্গে লাফিয়ে বাড়বে সাইক্লোন ও খরার পরিমাণ।
কেবল মাত্র গ্লোবাল ওয়ার্মিংই একমাত্র ‘ভিলেন’ নয়। গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলন, খনিতে খননকাজ, প্রাকৃতিক জলাভূমি পুনরুদ্ধারের মতো নানা প্রকল্পের ধাক্কাই এই ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনছে।