খোঁজ মিলেছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীনতম অরণ্যের। ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৩৮ কোটি ৫০ লাখ বছরের পুরোনো। আর এই অরণ্যের খোঁজ মিলেছে নিউ ইয়র্কের কায়রো শহরে। ‘কারেন্ট বায়োলজি’তে প্রকাশিত সমীক্ষায় প্রকাশ্যে এসেছে বিশ্বের প্রাচীনতম এ অরণ্যের সকল তথ্যাদি।
এর আগে নিউ ইয়র্কের গিলবোয়ায় জঙ্গলের যে জীবাশ্ম মিলেছিল, সেটাকেই বিশ্বের প্রাচীনতম ভেবেছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, কায়রোর এই অরণ্য গিলবোয়ার জঙ্গলের থেকেও প্রায় ২০-৩০ লাখ বছর পুরোনো এবং চরিত্রগতভাবেও সম্পূর্ণ আলাদা।
কায়রোর বিশাল গহ্বরের মধ্যে শিকড়ের মতো ছাপ প্রথম লক্ষ্য করেন নিউ ইয়র্ক স্টেট মিউজিয়ামের সদস্য ক্রিস্টোফার বেরি। কিন্তু বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পারেননি তখন।ক্রিস্টোফার বেরি ভেবেছিলেন, সম্প্রতি কোনও বড় গাছ ওখান থেকে উপড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু মাটির চরিত্র পরীক্ষা করে গবেষকরা নিশ্চিত হন, শিকড়ের এই ছাপ বহু বছরের পুরাতন।
বিংহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক এবং গবেষণাপত্রের মূল লেখক উইলিয়াম স্টেইন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে সন্দেহ হতেই মাটির ও ধুলোর স্তর খুব সাবধানে সরিয়ে শুরু হয় ম্যাপিংয়ের কাজ। স্টেইনের দলের ব্যাখ্যা অনুযায়ী বিধ্বংসী বন্যায় জঙ্গলের অধিকাংশ গাছ মরে গিয়েছিল, শিকড়গুলো জীবাশ্ম হিসেবে থেকে গিয়েছে। এমনকি বড় বড় গাছের কাছে পাওয়া গেছে মাছের জীবাশ্মও ।
ক্রিস্টোফার বেরির কথায়, ‘প্রাচীনতম এই জঙ্গলের খোঁজ অরণ্যে ঢাকা পৃথিবী এবং অরণ্যহীন পৃথিবীর পার্থক্য বুঝিয়ে দেয়।’
গবেষণায় উঠে এসেছে এই পৃথিবীতে ডায়নোসররা যে সময় এসেছিল, তারও প্রায় ১৪ কোটি বছর আগের এই জঙ্গল। এখানে মূলত তিন ধরনের গাছের খোঁজ মিলেছে, যার মধ্যে দু’ধরনের গাছ চরিত্রগতভাবে স্বতন্ত্র। গিলবোয়ার জঙ্গলের সঙ্গে সেগুলোর নেই কোনও মিল।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, বিপুল সবুজের উপস্থিতিতে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা অনেকটা কমে গিয়েছিল, আর তাতেই পৃথিবীর তাপমাত্রা যায় কমে। এটাই হয়তো বিপুল অরণ্য ধ্বংসের কারণ। স্টেইনের বক্তব্য, ‘আজকের যুগে পরিস্থিতি ঠিক উল্টো। এখন কার্বন ডাই-অক্সাইড এতটা বেড়েছে, ফের আমরা অবলুপ্তির মুখে।’সূত্র: এই সময়
