কলকারখানার বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে মাটি থেকে গ্রিনহাউস নিঃসরণ বাড়ছে
বায়ুদূষণের প্রভাবে মাটি থেকে গ্রিনহাউস নিঃসরণ বাড়ছে। ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বনের পরিমাণ সাধারণের চেয়ে বেশি হারে বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে জলবায়ু পরিবর্তনে। জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা মারাত্মক প্রভাব ফেলছে পরিবেশের ওপর।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুযায়ী, কলকারখানা থেকে নিঃসৃত নাইট্রোজেন অক্সাইড মাটিতে মিশে যাচ্ছে। এতে মাটির স্বাস্থ্য খারাপ হচ্ছে। রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে মাটি থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসৃত হয়ে বায়ুমণ্ডলে মিশছে।
শিল্প কলকারখানা, কৃষি পদ্ধতি এবং যানবাহন—সবকিছু থেকেই প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসৃত হয়। মূলত জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়ে তা থেকে নাইট্রোজেন অক্সাইড তৈরি হয়। আর তা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।
১৮৫০ সাল থেকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন অক্সাইডের মাত্রা তিন গুণ বেড়েছে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল বুঝতে চেয়েছিল, এই অতিরিক্ত নাইট্রোজেন মাটির কার্বন ধরে রাখার এবং গ্রিনহাউস গ্যাসে পরিণত হওয়ার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করছে কি না।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহ-লেখক এবং সহ-অধ্যাপক পিটার হোমিয়াক বলেন, ‘যেহেতু নাইট্রোজেন উদ্ভিদের জন্য সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়, আমরা আশা করেছিলাম যে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন উদ্ভিদের বৃদ্ধির পাশাপাশি মাটির অনুজীবের ক্রিয়াকলাপকে বৃদ্ধি করবে, ফলে মাটিতে কার্বনের পরিমাণ বাড়বে।’
তবে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার বেশির ভাগ অংশজুড়ে থাকা ভূমিতে এর উল্টোটা দেখেছে গবেষক দল। দলটি দেখেছে, নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন অক্সাইড জমির মাটিকে অম্লীয় করে তোলে।
এই অম্ল ক্যালসিয়াম ক্ষারের সঙ্গে বিক্রিয়া করে। এতে উপজাত হিসেবে তৈরি হয় কার্বন ডাই অক্সাইড। ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বনের পরিমাণ বাড়ছে।
হোমিয়াক বলেন, ‘এই দূষণ মানুষই তৈরি করছে। তাই এর ফলও মানুষকে ভোগ করতে হচ্ছে। এই বিষাক্ত রাসায়নিকের প্রভাবে মাটির যে দুরবস্থা হচ্ছে, তার ভয়ংকর প্রভাব পড়ছে মানুষের শরীরেও। ফসলের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে সেই রাসায়নিক। আর সেখান থেকে ঢুকছে মানুষের শরীরে।’