পরিবেশ দূষণের কারণে বাড়ছে পৃথিবীর উষ্ণায়ন।সেই সাথে দ্রুত গতিতে গলছে পৃথিবীর সকল হিমালয়ের হিমবাহগুলো।যার কারণে বরফ গলা পানিতে হিমালয় সংলগ্ন হ্রদগুলো ভেসে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকরা।
গবেষকরা বলছেন, এই ভাবে হিমবাহ গলতে থাকলে আগামী এক দশকে মধ্যেই হিমালয়ের অন্তত পাঁচ হাজার হ্রদ ভেসে গিয়ে সৃষ্টি করতে পারে মহাপ্লাবন। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে পূর্ব হিমালয়ের হ্রদগুলো।
প্রাকৃতিকভাবেই হিমালয় সংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে কয়েক হাজার বিশালাকার প্রাকৃতিক হ্রদ।এদের গভীরতাও অনেক বেশি। বিশাল হলেও হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে এই হ্রদগুলো বিপুল পরিমাণ পানির চাপ সইতে ব্যর্থ হবে।ফলে পানিতে টইটুম্বুর হওয়া হ্রদগুলো ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি হিমালয়ের কোলে থাকা গ্রাম ও জনপদগুলোকেও নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। আর এটির সম্ভাবনা আগামী এক দশকের মধ্যেই।এটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’ এর একটি গবেষণাপত্রে।
এসম্পর্কে জার্মানির পোস্টড্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক জর্জ ভেহ্ ও অলিভার কোরুপ বলেন, হিমালয় পর্বতমালার অন্যান্য অংশের তুলনায় এই ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা সিকিম হিমালয়সহ পুরো পূর্ব হিমালয়ে অন্তত ৩ গুণ বেশি।
জানা যায়, গত দুই-তিন দশক ধরেই দ্রুত হারে গলতে শুরু করেছে হিমালয় পর্বতমালার ‘গ্লেসিয়ার’ বা হিমবাহগুলো। হিমবাহের বরফ গলা পানির স্রোতেই আশপাশের মাটি ও নুড়ি পাথরগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে এসে হিমালয়ের কোলে ঐ প্রাকৃতিক হ্রদ তৈরি করেছিল। গত দশকে সিকিম হিমালয়ে তৈরি হয়েছে এমন ৮৫টি হ্রদ। ২০০৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৮ বছরে ৮৫টি সুবিশাল হ্রদের জন্ম হয়েছে। কিন্তু উষ্ণায়নের কারণে যেভাবে হিমবাহ গলতে শুরু করেছে, তাতে বরফ গলা পানির তোড়ে হ্রদগুলোর পানিকে ঘিরে থাকা মাটি ও নুড়ি পাথরের দেওয়ালকে ভেঙে ভাসিয়ে দিতে পারে, যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘মোরেন’ বলা হয়।
গবেষক আরিয়েন ভাল্জ এই বিষয়ে বলেন, এই দশকেই হিমালয় পর্বতমালার একটি বড়ো অংশে হতে চলেছে ভয়াল বন্যা। যাকে ভূতত্ত্ববিদ্যার পরিভাষায় বলা হয়, গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড।