উল্কাপাতে ! প্রচণ্ড শব্দ ও আলোর ঝলকানি – আমেরিকায় চাঞ্চল্য
ডিজিটাল ডেস্ক: সন্ধ্যার অন্ধকার মাত্র ছুইছুই আর ঠিক তখনই সন্ধ্যার আকাশে হঠাৎই ছুটন্ত আলোর রেখা দেখঅ যায় আমেরিকার আকাশে। আর প্রায় সাথেসাথেই প্রচণ্ড শব্দ ও আলোর ঝলকানি। এভাবেই আমেরিকার (US) ভারমন্ট প্রদেশের বাসিন্দারা সাক্ষী হলেন এক অবিস্মরনীয় চাঞ্চল্যকর উল্কাপাতের অবতরন দৃশ্যের। কেবল আমেরিকাই নয়, ওই উল্কাপাতের ছটা নজরে এসেছে পাশ্ববর্তী নিউ ইংল্যান্ড ও কানাডা থেকেও।
নাসা জানিয়েছে, ওই উল্কাটি (Meteor) মাটিতে আছড়ে পড়ার তীব্রতা ছিল ২০০ কিলোগ্রাম টিএনটি বা ট্রাইনাইট্রোটলুইন বিস্ফোরণের সমান আর বিজ্ঞানীদের অনুমান, ওই উল্কাপিণ্ডটির ওজন ছিল প্রায় সাড়ে চার কেজি। দৈর্ঘ্যে ১৫ সেন্টিমিটারের কিছু বেশী। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়ার পরে তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টা প্রতি ৬৮ হাজার কিলোমিটার।
জানার বিষয় হচ্ছে যে, ওজনে পাঁচ কেজির কম হওয়া সত্ত্বেও কী করে ওই পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করল উল্কাটি?
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এর পিছনে অন্যতম কারণ উল্কাপিণ্ডটির দুর্দান্ত গতি আর আমাদের বায়ুমন্ডলের চাপের তীব্রতা কম হওয়া। যার ফলে বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়ার পর তার গতিপথে তৈরি হয়েছিল প্রবল চাপ। যার ফলে বাতাসে খানিকটা করে শূন্য অংশ সৃষ্টি হয়। নাসা জানিয়েছে, বাতাস এভাবে কেটে সামনে আগিয়ে যাওয়ার ফলেই ওই প্রবল শব্দের জন্ম হয়েছিল। উল্কাটি মাটিতে আছড়ে পড়ার সময় প্রবল ভাবে কেঁপে উঠেছিল আশপাশের ভূমি। আর সেই সঙ্গে উৎপন্ন হয়েছিল আছড়ে পড়ার প্রচণ্ড শব্দ।
উল্কাটি প্রথম দেখতে পাওয়ার উত্তেজনাময় মুহূর্তটির কথা জানিয়েছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী। তাঁর কথায়, ”আমি ভাগ্যবান যে একই সঙ্গে উল্কাটিকে দেখতেও পেয়েছিলাম। আবার তার আছড়ে পড়ার শব্দও পেয়েছিলাম মিসিসকোই নদীর ধারে।
সূর্যাস্তের ঠিক আগে আছড়ে পড়েছিল উল্কাটি। যেখানে ছিলাম, সেখানে শব্দের প্রাবল্য অত বেশি না থাকলেও শব্দ হয়েছিল। আর ঠিক তখনই আমি আকাশের দিকে তাকিয়েছিলাম। দেখেছিলাম আকাশে আলোর ছটা। দারুণ অভিজ্ঞতা!”
প্রসঙ্গত, উল্কাকে বলা হয় মহাকাশের জানলা। বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়া উল্কাপিণ্ডকে নিরীক্ষণ করেই সভ্যতার গতিবিধি ও বিশ্বে প্রাণের স্বরূপকে বুঝতে সাহায্য করেন বিজ্ঞানীরা। আর এভাবে উল্কাও আমাদের জানান দেয় অজানা সব তথ্যের।