উন্নত দেশগুলো ক্ষতিপূরণ না দিলে জলবায়ু মোকাবেলা অসম্ভব: আতিক
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সময় এখন কথা কম বলে কাজ বেশি করার। উন্নত দেশগুলো আমাদের কোনোভাবেই সাপোর্ট দিচ্ছে না। তারা উন্নয়নশীল ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ ও সাপোর্ট না দিলে এবারের জলবায়ু সম্মেলন বৃথা হবে।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) মিসরের শার্ম আল শেখে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অ্যা ম্যাটার অব স্কেল: সাব-ন্যাশনাল অ্যাকশন ফর ক্লাইমেট এম্বিশন শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রের ইউ.এস সেন্টার।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, এটি হ্যান্ড টু হ্যান্ড নয়, হার্ট টু হার্ট হিসেবে কাজ করতে হবে। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ বন্ধ করে অস্ত্র কিনতে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে তার তিনের একাংশ পরিবেশের জন্য ব্যয় করতে হবে। তাহলেই আমরা আগামী প্রজন্মকে একটি সুস্থ পরিবেশ দিয়ে যেতে পারব।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শহরে মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলছে। শহরের খালি জায়গা, সবুজ স্থান ও জলাশয়ে আবাসন গড়ে তোলা হচ্ছে। শহরে দারিদ্র্যের সংখ্যাও বাড়ছে।
তাদের জন্য আবাসন, খাবার পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। অবিলম্বে পদক্ষেপ না নিলে জলবায়ু পরিবর্তনে বিপর্যয় বাড়তেই থাকবে।
২০৩০ সালের আগে মাত্র ৮টি জলবায়ু সম্মেলন বাকি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন এখনই সময় কথা বলার। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
প্যারিসচুক্তি অনুযায়ী তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখতে যথেষ্ট পরিমাণ গ্রিনহাউজ গ্যাস (জিএইচজি) নির্গমন হ্রাস করতে হবে।
এ সময় মেয়র আতিক বলেন, খুবই সামান্য পরিমাণ গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন করা সত্ত্বেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বাংলাদেশ প্রতি বছর জনপ্রতি গড়ে ০.৫ মেট্রিক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ করে।
অথচ উন্নত দেশগুলো ২০ থেকে ৩০ গুণ বেশি নিঃসরণ করছে। যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রতি ১৫ দশমিক ২ মেট্রিক টন নিঃসরণ করে, যা প্রায় ৩০ গুণ বেশি। কিন্তু ২০৫০ সালের মধ্যে বা তার আগেই সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের প্রায় ১৭ শতাংশ ভূমি পানিতে তলিয়ে যাবে। অতএব এখনই উন্নত দেশগুলোকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
উন্নত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবেশের ক্ষতির কারণে আমাদের শস্য নষ্ট হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রান্তিক খামারিরা নিঃস্ব হয়ে যায়। উন্নত দেশগুলো বেশি বেশি কার্বন নিঃসরণ করে আমাদের ক্ষতি করছে। জমিতে লবণাক্ত পানি জমে ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।