আমাজন রেইনফরেস্টের ক্রমশ পুনর্জীবিত হওয়ার ক্ষমতা হারাচ্ছে
জলবায়ু পরিবর্তন এবং নিরবচ্ছিন্ন বন উজাড়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত আমাজন রেইনফরেস্ট পুনর্জীবিত হওয়ার ক্ষমতা হারাচ্ছে। এর ফলে এই অঞ্চল পুনরুদ্ধারের অযোগ্য বৃক্ষহীন তৃণভূমিতে রূপান্তরিত হতে পারে, যেটা এই অঞ্চল ও বিশ্বের জন্য মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনবে। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় এ কথা বলা হয়েছে।
গবেষকেরা সতর্ক করেছেন যে, সমীক্ষায় প্রাপ্ত এই ফলাফলের অর্থ হলো আমাজন প্রত্যাশিত সময়ের চেয়ে দ্রুত ধংসের প্রান্তে পৌঁছাতে পারে।
২৫ বছরের স্যাটেলাইট ডেটা বিশ্লেষণ করে, গবেষকেরা প্রথমবারের মতো খরা এবং দাবানলের মতো ধাক্কাগুলোর বিরুদ্ধে আমাজনের স্থিতিস্থাপকতা পরিমাপ করেছেন, যা বনের সামগ্রিক অবস্থার একটি প্রধান সূচক।
ন্যাচার ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালে গবেষকেরা জানিয়েছেন, বিশ্বের অর্ধেক রেইনফরেস্টের আবাসস্থল আমাজন বেসিনের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশির স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস পেয়েছে।
ধ্বংস বা খরার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে, বনের পুনর্জীবিত হওয়ার ক্ষমতা প্রায় অর্ধেক হ্রাস পেয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের গ্লোবাল সিস্টেম ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও সহ-লেখক টিম লেন্টন এএফপিকে বলেছেন।
“আমাদের স্থিতিস্থাপকতার পরিমাপ দুটি ফ্যাক্টরের মাধ্যমে বেশি প্রভাবিত হয়েছে। একটি হলো মানুষের উপস্থিতি যেখানে বেশি এবং আরেকটি হলো শুষ্ক স্থানগুলো”। তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেন।
জলবায়ু মডেলগুলো অনুসারে, পৃথিবীর পৃষ্ঠকে গড়ে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণকারী বৈশ্বিক তাপমাত্রা আমাজনকে ধীরে ধীরে উদ্ধার-অযোগ্য শুষ্ক উষর রাজ্যে পরিণত করতে পারে। যদি কার্বন দূষণ নিরবচ্ছিন্নভাবে চলতে থাকে,
এই শতাব্দীর মাঝামাঝি নাগাদ বন ধ্বংসের প্রক্রিয়াটি ঘটে যাবে।তবে, অবশ্যই, এর কারণ কেবল জলবায়ু পরিবর্তন নয়—মানুষ জঙ্গল কাটতে বা পুড়িয়ে ফেলতে ব্যস্ত, যা দ্বিতীয় একটি কারণ, বলেছিলেন লেন্টন।
“এই দুটি জিনিসই একে অপরের সঙ্গে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া করে, তাই আশঙ্কা রয়েছে যে, রূপান্তর আরও আগে ঘটতে পারে”।
আমাজন ছাড়াও, গ্রিনল্যান্ড ও পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকের বরফ, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও মিথেন সমৃদ্ধ সাইবেরিয়ার ভূগর্ভস্থ বরফ, দক্ষিণ এশিয়ায় মৌসুমি বৃষ্টিপাত, প্রবাল প্রাচীরের বাস্তুতন্ত্র এবং আটলান্টিক মহাসাগরের স্রোত সবই ঝুঁকিপূর্ণ সহনসীমায় রয়েছে, যা বিশ্বের আমূল পরিবর্তন ঘটাতে পারে।