মহাসাগরসমূহ সেকেন্ডে ৫ টি অ্যাটম বোমার সমান উত্তপ্ত হয়
মূল: KRISTIN HOUSER, FUTURISM
বাংলায়: তাহসিন তাহা (স্টুডেন্ট, ডিপার্টমেন্ট অব ল,
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা)
১৯৫০ এর দশক থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সকল তথ্য বিশ্লেষনের পর একটি আর্ন্তজতিক বিজ্ঞানীদের দল সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, বিশ্বের সমুদ্রের গড় তাপমাত্রা ২০১৯ সালে ছিল ০.০৭৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস (০.১৩৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট) যা ১৯৮১-২০১০ সময়ের গড় তাপমাত্রা হতে বেশি ।
ইহা খুবই সামান্য পরিমান উষ্ণতা মনে করার কোন কারন নাই, কারন বিশাল সমুদ্রের তুলনায় ইহা অত্যন্ত বেশী এবং বিজ্ঞানীদের গবেষনা অনুসারে, এ সামান্য বৃদ্ধির জন্য -২২৮ সেক্সটিলিয়ন জুলসে্র সমান উত্তাপের এক বিস্ময়কর আগমন দরকার, যা ১৩ জানুয়ারী ২০২০ তারিখে Atmospheric Science জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল।
প্রাসঙ্গিকভাবে বিবেচনা করলে ইহা একটি বিশাল সংখ্যা, তাই একজন বিজ্ঞানী গবেষনার পিছনে একটি বিস্ফোরক কাঠামোর সাথে তুলনা করে একটি গাণিতিক হিসাব কষে দেখেছিলেন যে, ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমাতে মার্কিন সামরিক বাহিনী যে পরিমান পারমাণবিক বোমা ফেলেছিল, তাতে কি পরিমান তাপ ছড়িয়েছিল।
চীনের একাডেমি অফ সায়েন্সের একজন লেখক লিজিংচেং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন- হিরোশিমায় পরমানু বোমটি প্রায় ৬৩,০০০ বিলিয়ন জুলসে্র শক্তির সাথে বিস্ফোরিত হয়েছিল। কিন্ত গত ২৫ বছরে অমাদের বিশ্বের মহাসাগর সমূহে যে পরিমান তাপ বেড়েছে তা ৩.৬ বিলিয়ন গুণ হিরোশিমা পরমানু বোমা বিস্ফোরনের সমান। এ হিসাবে গত ২৫ বছর ধরে প্রতি সেকেন্ডে গড়ে চারটি হিরোশিমা বোমার সমান শক্তি মহাসাগরে উৎপন্ন হচ্ছে, তবে আরও, ভয়ংকর বিষয় হলো এটি স্থির নয়, এ হারটির আকার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মিন্নেসোটার সেন্ট থমাস্ ইউনিভার্সিটির একজন গবেষক ও লেখক জন আব্রাহাম “The Vice” ম্যাগাজিনকে বলেছেন, “২০১৯ সালে সমুদ্র যে পরিমান উষ্ণায়ন হয়েছিল তা প্রতি সেকেন্ডে ৫টি হিরোসিমা বোমার সমান, এভাবে প্রতি সেকেন্ডে, প্রতি দিন ও রাত্রিতে এবং বছরের ৩৬৫ দিনই সমুদ্র উত্তপ্ত হচ্ছে। পারমানবিক বোমার ক্ষেত্রে তুলনামূলক সমস্ত ইউনিটের হিসাব করা যায়। তবে ২০১৯ এ পৃথিবী উত্তাপের হার ব্যক্তি প্রতি ১০০ হেয়ার ড্রায়ারের সমান উত্তপ্ত হয়েছে।
তিনি বলেছেন, ইহা কারিগরিক ভাবে খুবই নগন্য, কিন্তু এ শক্তির পরিমান ৫ টনের সমান যা পরিবেশের উপর বিশাল প্রভাব ফেলছে। বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে, সমুদ্রের স্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে ডলফিন এবং অন্যান্য সামুদ্রিক জীব মারা যাচ্ছে।
কারন তারা দ্রুত পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে পারছে না। এমনকি তাপের কারনে বায়ুমন্ডলে বাষ্পীভূত জলের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেটি আমাদের গ্রহের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
আব্রাহাম The Vice কে আরও বলেছেন- এটি হারিকেন এবং টাইফুনকে আরও শক্তিশালী করে তীব্র বৃষ্টিপাত ঘটায়। মনে রাখতে হবে, এটি আমাদের আবহাওয়া স্টেরয়েডের উপর প্রভাব ফেলছে। পরিস্থিতি কেবল খারাপ হতে চলছে এবং প্রতি মুহুর্তে আমরা উষ্ণায়নের গতি কমিয়ে দিতে বা বিপরীতে পদক্ষেপ নিতে দেরি করছি।