বিশ্বে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের প্রাণিদের আক্রমণ লক্ষ্য করা গিয়েছে। বিভিন্ন জীববৈচিত্র্যের এই আক্রমণের ফলে ক্ষতিও হয়েছে অনেক পরিমাণ। পঙ্গপালের আক্রমণ বর্তমান সময়ের একটি বিশেষ আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। পঙ্গপালের আক্রমণে ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। পাকিস্তানের পরে এবার আফ্রিকার সোমালিয়া, ইথিওপিয়া ও কেনিয়াসহ কয়েকটি দেশের ফসলী জমি উজাড় করে দিয়েছে পঙ্গপাল।অন্যদিকে এবার পঙ্গপালের আক্রমণের শিকার হয়েছে সৌদি আরবের ফসলি মাঠ।
জানা যাচ্ছে সৌদি আরবের প্রায় সব অঞ্চলেই হানা দিয়েছে এই পঙ্গপাল। ইতোমধ্যে পঙ্গপালের আক্রমণে দেশটির আসির, জাজান, আল-বাহা, কুনফোদাহ আল-লেখ ও মক্কার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক।
পঙ্গপালের এই আক্রমণের বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অঞ্চলের আবহাওয়া পঙ্গপালের বংশবৃদ্ধির জন্য খুবই উপযুক্ত হওয়ায় একইসাথে পঙ্গপালের ডিম দেয়ার সময় হয়ে যাওয়ায় দ্রুতই এই সংখট আরও তীব্র হয়ে দেখা দিতে পারে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
এদিকে আবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডান পঙ্গপালের কারণে ঘোষণা করেছে জরুরি অবস্থা । দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে সৌদি আরব থেকে আসা পঙ্গপালরাই এখানে তাণ্ডব চালাচ্ছে । ধারণা করা হচ্ছে যে কোনো সময় পার্শ্ববর্তী দেশ ইসরায়েলেও প্রবেশ করবে পঙ্গপাল ।
হঠাৎ করে পঙ্গপালের এই আক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে অস্বাভাবিক জলবায়ু পরিবর্তন।
পঙ্গপালের আক্রমণে এর আগে পাকিস্তানে গত ২০ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে সংকটে পড়েছে। পঙ্গপালের ঝাঁক দেশটির বিভিন্ন ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। যার কারণ পাকিস্তানে ঘোষণা করা হয়েছে জরুরী অবস্থা।বিশেষজ্ঞরা বলছেন পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ভারত ও চীনেও ক্ষতিকর এই পঙ্গপাল প্রবেশের সম্ভাবনাও রয়েছে অনেক।
প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তান থেকেই পঙ্গপালের এই ঝাঁক ছড়িয়ে পড়ে ইয়েমেনে।আর সেখান থেকেই লোহিত সাগর পার হয়ে হানা দিয়েছে আফ্রিকার ইরিত্রিয়া, সোমালিয়া, ইথিওপিয়ার মতো খাদ্য সংকটে থাকা দেশগুলোতে। পঙ্গপালের এই আক্রমণের ফলে সোমালিয়া সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে।
উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন যে, পতঙ্গপাল একা থাকলে তারা বেশ নিরীহ প্রাণী, কিন্তু যদি এরা দলবদ্ধভাবে থাকে তাহলে এরা অনেক হিস্র ও বিধ্বংস হয়ে ওঠে।
এক কিলোমিটার আকারের একটি পঙ্গপাল গ্রুপ যে পরিমাণে খাবার খায় সেই পরিমাণ খাবার দিয়ে ৩৫ হাজার মানুষকে ১ বছর খাওয়ানো সম্ভব। বলা হচ্ছে একটি বড় পঙ্গপালের দল দিনে ১২০ মাইল পর্যন্ত ফসল খেতে পারে। এই পঙ্গপাল শুধু খাবারই খায় না একই সাথে কাজ করে প্রজননের।
