অভিযোজন প্রকল্প আসছে ঝুঁকিপূর্ণ দ্বীপ ও চরে
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় ঝুঁকিপূর্ণ দ্বীপ ও চরে ‘অভিযোজন প্রকল্প’ নেওয়া হবে, পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় বিদেশি আগ্রাসী উদ্ভিদ নিয়ন্ত্রণেরও কৌশল ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্যে তিনি সরকারের এই পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।
তার এই বাজেটে পরিবেশ ও বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন খাতে ১ হাজার ২২৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা গেল অর্থবছরের সংশোধিত বরাদ্দের চেয়ে ১৫.২ শতাংশ বেশি।
গত অর্থবছরের মূল বাজেটে এ খাতে ১ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা রাখা হলেও, পরে সংশোধন করে তা ১ হাজার ৩৭ কোটি টাকায় নেমে আসে।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্র তীরবর্তী ছোট দ্বীপ ও নদী তীরস্থ চরগুলোতে অভিযোজনমূলক কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যেও একটি প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।
প্রকল্পটির নাম হচ্ছে ‘অ্যাডাপটেশন ইনিশিয়েটিভ ফর ক্লাইমেট ভালনারেবল অফশোর স্মল আইল্যান্ডস অ্যান্ড রিভারাইন চর ল্যান্ডস ইন বাংলাদেশ’।
এছাড়া ইউনাইটেড নেশন্স ফ্রেমওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জ- ইউএনএফসিসিসি’র নীতিমালা অনুযায়ী, জাতীয় গ্রিনহাউজ গ্যাস ইনভেন্টরি তৈরি এবং হালনাগাদ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘বাংলাদেশ: ফার্স্ট বাইনিয়াল আপডেট রিপোর্ট টু দ্য ইউএনএফস’ নামে একটি প্রকল্পও চলমান রয়েছে।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী জানান, দেশে ১০০০ উদ্ভিদ প্রজাতির ‘রেড লিস্ট ইনডেক্স’ তৈরি করা হবে ও পাঁচটি নির্বাচিত এলাকায় বিদেশি আগ্রাসী উদ্ভিদ প্রজাতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থাপনা কৌশল নির্ধারণ করা হবে।
বাস্তবায়ন হতে যাওয়া প্রকল্পের নাম ‘ডেভেলপিং বাংলাদেশ ন্যাশনাল রেড লিস্ট অব প্ল্যান্টস অ্যান্ড ডেভেলেপিং ইনভেসিভ প্লান্ট স্পেসিস ম্যানেজমেন্ট স্ট্রাটেজি ফর সিলেক্টেড এরিয়াস’।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা করতে অর্থায়নকে সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্তকরণ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে জলবায়ু সংক্রান্ত নীতি, পরিকল্পনা এবং কৌশলকে সরকারি বাজেট ব্যবস্থাপনায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, এ প্রক্রিয়ায় ২৫টি মন্ত্রণালয়ের বাজেট কাঠামো জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, ২০১৪ সালে গৃহীত ‘ক্লাইমেট ফিসক্যাল ফ্রেমওয়ার্ককে’ ২০২০ সালে হালনাগাদ করে এর পরিধি বাড়ানো হয়েছে। জলবায়ু অর্থায়নে ব্যক্তিখাতের অংশগ্রহণসহ উদ্ভাবনমূলক অর্থায়নের বিষয়গুলো সংযোজন করা হয়েছে।
বায়ুদূষণের সঠিক মাত্রা জানার লক্ষ্যে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বিভাগীয় এবং শিল্পঘন শহরগুলোতে ১৬টি সার্বক্ষণিক বায়ুমান পরিবীক্ষণ কেন্দ্রের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, শব্দদূষণ কমানোর জন্য বাংলাদেশ সচিবালয় সংলগ্ন এলাকাকে হর্নমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে।