35 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৮:৪৭ | ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
অবৈধ ভাবে পাহাড় কেটে পরিবেশ বিপর্যয়
পরিবেশ দূষণ

অবৈধ ভাবে পাহাড় কেটে পরিবেশ বিপর্যয়

অবৈধ ভাবে পাহাড় কেটে পরিবেশ বিপর্যয়

পাহাড়-টিলা কেটে সাদামাটি উত্তোলনের ফলে ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি পাহাড়ি বনের ওপর নির্ভরশীল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষতির অভিযোগ করে তা বন্ধ করার দাবি তোলা হয়েছে।

চলতি মাসে নেত্রকোণার দুর্গাপুর ও ধোবাউড়ার সাদামাটি এলাকা পরিদর্শনের পর শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এ দাবি জানায় নাগরিক প্রতিনিধি দল।

মতবিনিময়ে ‘অপরিকল্পিত উপায়ে’ প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ বন্ধ করার পাশাপাশি ওই এলাকার বসবাসকারী হাজং, মান্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনেরও দাবি জানানো নয়।

সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাগরিক প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।



তিনি জানান, ধোবাউড়ার ভেদীকুড়া মৌজায় সাদামাটি উত্তোলনের ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি, পাহাড় ও পাহাড়ি বনের ওপর নির্ভরশীল হাজং, মান্দি ও অন্যান্য নৃ-গোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

ওই এলাকার স্থানীয় নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের বক্তব্য তুলে ধরে অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, বন ও গাছপালা ধ্বংসপ্রাপ্ত, বহু বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত, জীববৈচিত্র্য বিপন্ন, পানি দূষণ, খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে।

খননের ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় কৃষিকাজ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে, ভারী যানবাহনের কারণে শব্দ দূষণ ও রাস্তাঘাট ভেঙে পড়ার মত ঘটনা ঘটছে।

যে পাহাড় ও বন এই অঞ্চলের জানা ইতিহাসের পুরোটা সময় হাজং, গারো ও অন্যান্য আদিবাসীদের জন্য ছিল বাসযোগ্য নিজস্ব আবাসভূমি, সেটাই এখন অপরিকল্পিত ও নির্বিচার সাদামাটি আহরণের ফলে ক্রমশ অবাসযোগ্য হয়ে উঠছে।

এ শিক্ষক জানান, ক্ষু্দ্র-নৃগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠনের আহ্বানে ঢাকা থেকে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গত ৮, ৯ ও ১০ এপ্রিল নেত্রকোণার দূর্গাপুর ও ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় সাদামাটি পাহাড় পরিদর্শন করে।

দলটি উপেজলার কয়েকটি গ্রামে গিয়ে স্থানীয় হাজং, মান্দি ও বাঙালি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া দূর্গাপুর প্রেসক্লাবে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সঙ্গে মতবনিমিয় করে এবং নেত্রকোণা জেলা প্রশাসকের সঙ্গেও দেখা করে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই দুর্গাপুর উপজেলার মেজপাড়া, আরাপাড়া ও পাচকানাইহা মৌজা থেকে পরিবেশ ছাড়পত্র ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ছাড়া নির্বিচারে পাহাড় ও টিলা কেটে সাদামাটি আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। সে সময় হাইকোর্ট এ ধরনের কাজকে জনস্বার্থ পরিপন্থি বলে আখ্যা দেয়। আদালতের এই নিষেধাজ্ঞার পর দুর্গাপুরের ওই মৌজাগুলোয় সাদামাটি আহরণ প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে।



দূর্গাপুরে নিষিদ্ধ করার পর ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় একই কায়দায় অপরিকল্পিতভাবে টিলা কেটে এখন সাদামাটি উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।

আমরা সাদামাটি উত্তোলনের বর্তমান এলাকা পরিদর্শন করে দেখেছি যে, দুর্গাপুরের তিনটি মৌজায় যেভাবে সাদামাটি আহরণ কাজ পরিচালিত হত তার থেকে ধোবাউড়ায় খননকাজে বস্তুত কোনো পার্থক্য নেই। রাষ্ট্রীয় আইন, বিধিবিধান ও প্রটোকল অগ্রাহ্য করে টিলা কেটে চলছে সাদামাটি আহরণ।

ওই এলাকার পরিবেশ ও জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “পরিদর্শনকালে আমরা জানতে পেরেছি, সাদা মাটি উত্তোলনের জন্য ধোবাউড়া উপজেলায় আরও কয়েকটি টিলা কিনে ফেলা হয়েছে, যদিও এখনও খনন শুরু হয়নি।”

হাইকোর্টের নির্দেশের দুবছর পরও দুর্গাপুরের মানুষ এ পর্যন্ত সাদা মাটি উত্তোলনের প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারেনি বলে অভিযোগ করেন অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।

“প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য নষ্ট করায় সেখানকার পরিবেশ এখন ভয়ঙ্কর ও বীভৎস। কোনো শৃঙ্খলার লক্ষণ কোথাও নেই।”

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত