38 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৮:০৫ | ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
অবৈধ ভাবে কৃষি জমির মাটি লুট
কৃষি পরিবেশ

অবৈধ ভাবে কৃষি জমির মাটি লুট

অবৈধ ভাবে কৃষি জমির মাটি লুট

পরিবেশ আইন অমান্য করে কয়েক মাস ধরে গাজীপুর নগরের বিভিন্ন এলাকায় রাতের আঁধারে কৃষিজমির উর্বর মাটি কেটে সরবরাহ করা হচ্ছে ইটভাটায়।

এতে যেমন জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্যও। সন্ধ্যা হতেই চলাচল শুরু করে মাটিভর্তি শতাধিক ট্রাক। চলে রাতভর। মাটিবাহী ট্রাকের প্রভাব পড়ছে সড়কগুলোতেও। মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়ে চলেছে।



খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী ভূমি কার্যালয়ের আওতাধীন বাইমাইল, কড্ডা, ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকার কৃষিজমিগুলো থেকে রাতের আঁধারে কাটা হচ্ছে মাটি। বছর দশেক ধরে চলছে এই ধরনের মাটিকাটা। সম্প্রতি তা বেড়েছে।

গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকার বাসিন্দা আসলাম হোসেন বলেন, ভাওয়াল মির্জাপুর বাজারের উত্তর পাশে তুরাগ নদের পারের এলাকা থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। ধ্বংস করা হচ্ছে কৃষিজমি। এ ছাড়া পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করে মাটি কেটে নিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

গাজীপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ফসলি জমির উপরিভাগের ১০ থেকে ১২ ইঞ্চির মধ্যে মাটির জৈব উপাদান থাকে। সেই মাটি কাটা হলে জমির জৈব উপাদান চলে যায়। এতে জমির স্থায়ী ক্ষতি হয়। ফসলি জমির মাটি কাটা তাই বেআইনি।

বাইমাইল এলাকায় তুরাগ নদের পাড়ে দেখা যায়, ওই এলাকায় ময়লা-আবর্জনার স্তূপের দক্ষিণ পাশে তুরাগ নদ ঘেঁষে ফসলি জমি থেকে প্রতিদিনই মাটি লুট করা হচ্ছে।

মাটি ব্যবসায়ীরা ভেকু (এক্সকাভেটর) দিয়ে কোথাও ২০ থেকে ৩০ ফুট গভীর গর্ত করে মাটি নিয়ে যাচ্ছে। এসব গর্তে পাশের কৃষিজমির মাটিও ভেঙে পড়ছে। কোনো কোনো জমির মালিক টাকার লোভে মাটি বিক্রি করলেও অধিকাংশ কৃষক বাধ্য হয়ে মাটি বিক্রি করছেন।



মাটি ব্যবসায়ীদের লুট থেকে বাদ যাচ্ছে না খাসজমি, খাল ও নদ-নদীর তীর। এসব মাটির শেষ ঠিকানা হচ্ছে ইটভাটা। গভীর গর্ত করে মাটি কেটে নেওয়ায় এরই মধ্যে শতাধিক একর কৃষিজমি জলাশয়ে পরিণত হয়েছে।

জমিগুলোয় বোরো ধান আর শর্ষে চাষ করা হতো। গভীর গর্ত করে মাটি কাটায় ওই সব জমিতে দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসল উৎপাদন। পরিবেশ ও প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

গাজীপুরে বাইমাইল এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, ওই এলাকায় কয়েক বিঘা জমির ওপর ধান চাষ ও বিভিন্ন সবজি লাগিয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

রাতের আঁধারে শিপন আহমেদ নামের এক মাটি ব্যবসায়ী কৃষিজমি থেকে এক্সকাভেটর দিয়ে গভীর গর্ত করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে পাশের কৃষিজমির মাটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মাটিকাটা বন্ধ না করলে একসময় ওই এলাকা থেকে কৃষিজমি হারিয়ে যাবে বলে মনে করছেন বাসিন্দারা।

কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ার বিষয়টি শিকার করে শিপন আহমেদ বলেন, ‘যাঁরা মাটি বিক্রি করছেন, তাঁরা জেনেশুনেই বিক্রি করছেন। আর আমরা কিনে নিয়ে আশপাশের ইটভাটামালিকদের কাছে বিক্রি করছি। এই এলাকার মাটি ইটভাটার জন্য খুবই উপযোগী মাটি।’



ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩–তে মাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসকরণ বিষয়ে বলা হয়েছে, অন্য আইনে যা–ই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে কৃষিজমি বা পাহাড় বা টিলা হতে মাটি কেটে বা সংগ্রহ করে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন না।

কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ার বিষয়ে গাজীপুরে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নয়ন মিয়া বলেন, খোঁজ নিয়ে ওই এলাকায় অভিযান চালানো হবে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত