পৃথিবীতে প্রায় ২৩০০০ প্রজাতির ৪০ হাজার কোটি উদ্ভিদ রয়েছে। তাই উদ্ভিদকে বিশেষায়িত করতে অনেক কিছুই বলা প্রয়োজন।প্রাত্যহিক জীবনে আমরা যে উদ্ভিদগুলো দেখতে পাই তার মধ্যে এমন কিছু উদ্ভিদ রয়েছে যারা বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে ভিন্ন ও স্বতন্ত্র। যাদের প্রতি বিস্মিত হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এমন কিছু উদ্ভিদ যাদের উচ্চতা, পুরুত্ব, উজ্জ্বল সব রং দিয়ে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। এদের ছবি প্রকাশিত হলে অতিমাত্রায় বিশেষ উদ্ভিদগুলো ইন্টারনেট জগতে বিশেষভাবে আলোচিত হয়।
উপরের ছবির গাছটি তার প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয়। মনোরম গোলাপি পুস্পপুঞ্জ সহকারে এই বৃক্ষের বয়স ১২৫ বছরেরও বেশি। এটি ‘রডোডেনড্রন’ নামে সুপরিচিত। যদিও একে ‘গাছ’ বলা হচ্ছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি একটি বিশাল গুল্মের সমাহার। এই বৃক্ষটির বিশেষ হওয়ার পেছনে কারণ কী? বেশিরভাগ রডোডেনড্রন গাছ দেখতে গুল্মের মতোই হয়, কিন্তু বিশেষ এই গাছটি বয়সের কারণে তার এই সৌন্দর্য ধারণ করেছে। নিজেকে এতো বড় আকৃতি দিতে জীবনে দীর্ঘ সময় পেয়েছে গাছটি।
পৃথিবীব্যাপী শ্বাসরোধ করা সুন্দর এমন আরো অনেক গাছ রয়েছে। এখানে এরকম দর্শনীয় কিছু উদ্ভিদের বর্ণনা দেয়া হলো।
১৪৪ বছর বয়সী ‘উইস্টেরিয়া’, জাপান
জাপানে অবস্থিত এই উইস্টেরিয়া গাছগুলো এতোই বিশাল আকৃতির যে বড় বড় কিছু রড দিয়ে এর এঁকেবেঁকে যাওয়া শাখাগুলোর ভর টিকিয়ে রাখা হয়েছে। বিশাল গাছগুলোর আঁকাবাঁকা শাখা প্রশাখা থেকে ঝরে পড়ে গোলাপী ও বেগুনি রঙের মনোমুগ্ধকর ফুল। সারা পৃথিবী থেকে জাপানে ঘুরতে আসা মানুষ এই উইস্টেরিয়া গাছগুলোর নীচ দিয়ে একটু হেঁটে বেড়ানোর কথা ভোলে না।
অনন্য সুন্দর জাপানীজ ম্যাপল গাছ, পোর্টল্যান্ড, ওরাগন
প্রস্ফুটিত চেরি, বন, জার্মানি
এই চেরি গাছগুলোর নীচ দিয়ে হাঁটার সময় যে কেউ রাস্তার কোলাহল, তাড়াহুড়ো, বায়ু দূষণ সবকিছুই ভুলে যাবে।
ঝুলন্ত শ্যাওলা দিয়ে সাজানো দক্ষিণমেরুর গাছ, ওরাগন।
ড্রাগনব্লাড, ইয়েমেন
এই গাছটি থেকে উৎপন্ন লাল রঙের রস’ই গাছটির ড্রাগনব্লাড নাম হওয়ার পেছনের কারণ। গাছটি থেকে জাম জাতীয় এক ধরনের ফলও উৎপন্ন হয়, যার প্রতিটিতে ১-৩টি বীজ থাকে। এ বীজ পাখি ও অন্যান্য পশুর খাবার।
জাকারান্ডা, কুলিনান, দক্ষিণ আফ্রিকা
রেইনবো ইউক্যালিপটাস, কাওয়াই, হাওয়াই
রেইনবো ইউক্যালিপটাস তার চারপাশের পরিবেশ নিয়ে বেশ খুঁতখুঁতে থাকে। কিন্তু অনুকূলে সুষ্ঠু পরিবেশ পেলে গাছটি সবচেয়ে সুন্দর হয়ে বেড়ে ওঠে। এর বহু রঙ বিশিষ্ট বাকলে রংধনুর সবগুলো রঙই লক্ষণীয় হয়।
ম্যাপল গাছের সুড়ঙ্গ, ওরাগন
ম্যাপল গাছগুলো শুধু যে দর্শনীয় তা নয়, এগুলো তৈরি করেছে অনন্য অসাধারণ গাছ সুড়ঙ্গ যার ভেতর দিয়ে হাঁটতে পারবে যে কেউ।
দৈত্যাকৃতির সেকুইয়া, ক্যালিফোর্নিয়া
সেকুইয়া গাছটি তার দৈত্যাকৃতির জন্য ‘দ্যা প্রেসিডেন্ট’ নামে খ্যাত। নিজ প্রজাতির মধ্যে এটি সারা পৃথিবীতে তৃতীয় বৃহত্তম গাছ।
অন্ধকার প্রাচীরসম গাছ, আয়ারল্যান্ড
এই গাছগুলো মূলত আঠারো শ শতকে স্টুয়ার্ট পরিবার স্থাপন করেছিলো। তাদের ধারণা ছিল গাছগুলো তার স্বতন্ত্র প্রাকৃতিক দৃশ্যের সাথে অতিথিকে অভ্যর্থনা জানাবে। ২০০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে কিন্তু গাছগুলো এখনও তেমনই রয়ে গেছে। এর আকর্ষণীয় বিন্যাস দর্শনের জন্য অনেকেই এখানে আসেন। যারা ‘গেইম অব থ্রোনস’ দেখেছেন তাদের কাছে এই অন্ধকার প্রাচীর অনেক সুপরিচিত। কারণ ছবির কিংস রোডের স্থানটি এটিই ছিল।
এভিনিউ অব ওয়াক্স, ডিক্সি বাগান, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া
ঝড়ো হাওয়ার গাছ, নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডের কিছু অংশে বাতাস অনেক তীব্র থাকে। সেখানে এমন কিছু গাছ আছে যারা বাতাসের সাথে বেঁকে, মুচড়ে অনবরত বাতাসের সাথে পুরো শরীর ভাসিয়ে দিতে পারে।
ফ্লামবয়ান্ট, ব্রাজিল
অ্যাঞ্জেল ওক, জনস আইল্যান্ড, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া
বাওবাব, মাদাগাস্কার
সূত্র : HOTTITI