27 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৮:১৪ | ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
অতিরিক্ত পর্যটকে ঝুঁকিতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান
জীববৈচিত্র্য প্রাকৃতিক পরিবেশ

অতিরিক্ত পর্যটকে ঝুঁকিতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান

অতিরিক্ত পর্যটকে ঝুঁকিতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান

মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রতিবছর বেড়াতে আসছেন এর ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় ১৩ গুণ বেশি পর্যটক। বিপুলসংখ্যক পর্যটক আসায় আশপাশের ব্যক্তিপর্যায়ের বেসরকারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো লাভবান হলেও, বন বিভাগের আয় নামমাত্রই বলা চলে।



এই বিপুলসংখ্যক পর্যটকের চাপে হুমকির মুখে পড়ছে উদ্যানের জীববৈচিত্র্য। তাই পর্যটকের সংখ্যা সীমিত করা ও পরিবেশ সুরক্ষায় তহবিল গঠনের পক্ষে মত দিয়েছেন পরিবেশবিদেরা।

বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের সিলেট বিভাগের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, লাউয়াছড়া বনে প্রতিবছর গড়ে প্রায় দুই লাখ লোক বেড়াতে যান।

অথচ তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বাৎসরিক ধারণক্ষমতা সর্বোচ্চ ১৫ হাজার। বন বিভাগ বলছে, বছরে এর বেশি পর্যটক যাওয়ায় লাউয়াছড়া বনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে, ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের, হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য।

বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের সিলেট বিভাগের বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমরাও চাই এখানে পর্যটকের সংখ্যা সীমিত করা হোক। না হলে এই বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা কঠিন।’

১৯৯৬ সালে সিলেট বন বিভাগের পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনের ১ হাজার ২৫০ হেক্টর এলাকা নিয়ে গড়ে তোলা হয় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। এ বনে বিরল প্রজাতির উল্লুক, চশমা পরা বানর, লজ্জাবতী বানর, বনরুই, মেছো বাঘ, মায়া হরিণ, বিভিন্ন জাতের সাপ ও নানা জাতের পাখির অভয়াশ্রম।

লাউয়াছড়া পিপলস ফোরাম ও পর্যটন সেবা সংস্থার হিসাবে, লাউয়াছড়া বনের পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে এর আশপাশে ৬৫টি হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট তৈরি হয়েছে। এসব স্থানে সাত থেকে আট হাজার পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা আছে।



এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বন বিভাগ সহব্যবস্থাপনা এবং ইকো ট্যুরিজমের নামে লাউয়াছড়া উদ্যানকে রমনা উদ্যানের মতো অবস্থা বানিয়ে ফেলেছে।

অথচ দেশের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, বনটি মূলত বন্য প্রাণীর জন্য সংরক্ষিত। ফলে সেখানে পার্কের মতো লাখ লাখ মানুষের বিচরণের সুযোগ দিয়ে আর সরকারি-বেসরকারি খাতের মাধ্যমে কিছু অর্থ আয়ের জন্য বনটিকে চিরতরে ধ্বংস করা হচ্ছে, যা দ্রুত বন্ধ করে পর্যটন সীমিত রাখা উচিত।

বিশ্বের খ্যাতনামা প্রকাশনা সংস্থা স্প্রিনজারের স্মল স্কেল ফরেস্ট্রি নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে গত ১২ নভেম্বর প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, লাউয়াছড়া পর্যটনকেন্দ্রে বেড়াতে গিয়ে পর্যটকেরা বছরে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা ব্যয় করেন।

এই ব্যয় মূলত হোটেল, যাতায়াত, খাওয়াদাওয়াসহ অন্যান্য খাতে করে থাকেন পর্যটকেরা। অথচ প্রবেশমূল্য হিসাবে বন বিভাগ পায় মাত্র ৭০ লাখ টাকার মতো।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নারায়ণ সাহা ও অস্ট্রেলিয়ার সানশাইন কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শরিফুল মুকুল যৌথভাবে এই গবেষণা করেছেন। শরিফুল মুকুল বলেন, পর্যটনের সুফল এই উদ্যানকেই দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।

এ জন্য এর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় একটি তহবিল গঠন করতে হবে। পর্যটকেরা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন খাতে যে অর্থ ব্যয় করেন, সেখান থেকে এ তহবিল সংগ্রহ করা উচিত। এটা কীভাবে করবে, সে প্রক্রিয়া সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদেরই খুঁজে বের করতে হবে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত