হাতিরঝিলে এখন শিল্পের বর্জ্য কারখানা
কেবল বৃষ্টির পানি আসার কথা থাকলেও পানি নিষ্কাশন লাইন হয়ে পয়োবর্জ্য পড়ছে হাতিরঝিলে। বাসাবাড়ির পয়োবর্জ্য, শিল্পের বর্জ্য আর কারওয়ান বাজারের মাছ আড়তের পানি ঢুকে সয়লাব হয়েছে হাতিরঝিল। আর তাতে দম নেওয়া কঠিন ঠেকছে ঢাকার অন্যতম এ বিনোদন কেন্দ্রে।
এসব পানি পয়োনিষ্কাশন নালা হয়ে শোধনাগারে চলে যাওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা ওয়াসার স্টর্ম স্যুয়ার লাইন হয়ে বর্জ্য চলে আসছে হাতিরঝিলে। ফলে নোংরা হচ্ছে হাতিরঝিল, পরিবেশ দূষণ হয়ে বাড়ছে দুর্গন্ধ।
দূষণের মাত্রা এতটাই যে হাতিরঝিলের পানি শোধনের যন্ত্রও এ অতি নোংরা পানি শোধন করতে পারছে না বলে জানাচ্ছে রাজউক। ছড়িয়ে পড়া উৎকট গন্ধে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন হাতিরঝিলের আশপাশের এলাকার বাসিন্দা এবং হাতিরঝিলের নৌযানে করে চলাচলকারী যাত্রীরা। আর যান্ত্রিক জীবনে প্রশান্তির হাওয়া খেতে মানুষরাও পড়ছেন বিড়ম্বনায়।
হাতিরঝিল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রামপুরা, গুলশান, মহানগর প্রকল্পের কাছে ঝিলের পানি সবুজাভ। পানিতে তেমন দুর্গন্ধ নেই। তবে মধুবাগ, এফডিসির সামনের অংশ, দিলু রোড এবং সোনারগাঁও হোটেলের মাঝখানের অংশের পানি কুচকুচে কালো, তীব্র দুর্গন্ধ।
ইস্কাটনের বিয়াম গলির বাসিন্দা আকরাম হোসেন একটা টং দোকান চালান ভেঙে ফেলা বিজিএমইএ ভবনের সামনে। আকরাম বলছিলেন, প্রায় সারাবছরই এই পানিতে দুর্গন্ধ থাকে।
“যখন সেনাবাহিনী আছিল তহন এমুন দুর্গন্ধ দেহি নাই। তারা চইল্লা যাওনের পর পানির অবস্থা খারাপ হয়্যা গ্যাছে। বৃষ্টি হইলে দুর্গন্ধ কিছুডা কমে। কিন্তু এইবার বৃষ্টিও কম হইতাছে, গন্ধ বেশি।”
রাজধানীর বাড্ডার বাসিন্দা আহমেদ হোসেনের অফিস কারওয়ান বাজারে। হাতিরঝিলে চলাচলকারী বোটে যাতায়াত করেন তিনি। তিক্ততার কথা বলতে গিয়ে আহমেদ হোসেন বলেন, “এফডিসির সামনে থেকে বোটে উঠি।
বোটে যেতে সময় কম লাগে, ঝক্কি নেই। কিন্তু পানিতে চরম দুর্গন্ধ, পেট ফুলে আসে। ওদিকটায় আবার তেমন গন্ধ নাই।”
হাতিরঝিলে হাঁটার জন্য করা হয়েছে সুন্দর ফুটপাত। তবে জায়গায় জায়গায় ফুটপাতের পাশে রয়েছে ময়লার স্তূপ, যার মধ্যে বেশিরভাগই পলিথিন ও প্লাস্টিক।