সুপারি গাছের পাতা দিয়ে পরিবেশবান্ধব বাসনপত্র
কক্সবাজারের টেকনাফে সুপারি গাছের পরিত্যক্ত স্থানীয় ভাষায় কুল ডাল বা পাতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব বাসনপত্র সহ তরকারি পরিবেশনের নানান রকমের সরঞ্জাম। আকর্ষণীয় এই সরঞ্জামাদী শতভাগ পচনশীল ও স্বাস্থ্যকর, লাভজনক, সাশ্রয়ী ও রাসায়নিকমুক্ত।
‘প্লাস্টিকমুক্ত পৃথিবী গড়ি, সুপারি পাতার সাথেই চলি’ এ স্লোগানে টেকনাফের মনির এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ২০২৩ সাল থেকে এই পরিবেশ বান্ধব বাসন পত্র তৈরি করছেন। তাকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে এনজিও সংস্থা কোডেক এর নেচার এন্ড লাইভ প্রকল্প।
২৪ ডিসেম্বর টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চত্বরে কুটির শিল্প মেলা- ২০২৪ এর স্টলে এটি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। এটি কিনতে রীতিমতো ভীড় জমিয়েছে ক্রেতারা। অনেকে বাড়ির সুকেইচে সাজিয়ে রাখতে এবং সৌন্দর্য বর্ধনে কিনছেন, আবার অনেকে উৎসুক হয়ে কিনে নিচ্ছেন।
সুপাারি গাছের পাতায় তৈরি এসব বাসন পত্র, বাড়ির কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন হোটেলে ওয়ান টাইম বা একবার ব্যবহার করে এমন কাজে ব্যবহারে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে। বিশেষ করে পিকনিক, সেমিনার খাবার পরিবেশনকালে এর ব্যবহার সুনিশ্চিত করা যাবে। এটি দামেও সাশ্রয়, স্বাস্থ্যকর ও রাসায়নিকমুক্ত। প্রতিটি বড় প্লেট বা বাসন ৮-১০ টাকা, ছোট বাটি ৪-৫ টাকার মধ্যে বিক্রয় করা যায়। পঁচনশীল হওয়ায় যেখানে সেখানে ফেলে দিলেও পরিবেশের কোন প্রকার ক্ষতি হবেনা।
এ বিষয়ে উদ্যোক্তা মনির এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী মনির আহমদ বলেন, তিনি ইউটিউবে দেখে প্রথমে এই কাজের প্রতি উৎসাহিত হয়ে টেকনাফে ন্যাচার নিয়ে কাজ করে এমন এনজিও সংস্থা কোডেকের নেচার এন্ড লাইফ প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সহিত যোগাযোগ করেন। তখন ওই প্রকল্পের মাধ্যমে তাকে আর্থিক সহযোগিতা করলে ২০২৩ সনের শুরুতে সুপারি গাছের পাতা দিয়ে বাসন পত্র তৈরি করতে শুরু করেন। তার তিনটি ইঞ্জিন বা ডাইস রয়েছে। এর মাধ্যমে দৈনিক ২৫০-৩০০ পিস বাসনপত্র তৈরি করতে সক্ষম হন।
তিনি আরো জানান- পর্যটন মৌসুমে এর চাহিদা বেশি থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে টেকনাফের পর্যটক সংখ্যা কমে যাওয়া তেমন অর্ডার পাচ্ছেনা।
তিনি পরিবেশ সম্মত এই বাসনপত্র বিক্রি করতে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতা কামনা করেছেন। তিনি চাইলে বিভিন্ন সেমিনার, বড় বড় রেস্তোরাঁয়, জিও-এনজিও তে এর ব্যবহার বাড়িয়ে পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখতে পারেন। সেই সাথে স্বাস্থ্যকর ও রাসায়নিকমুক্ত বাসনপত্রের চাহিদা বাড়বে।
উল্লেখ্য, পান-সুপারির জন্য টেকনাফ বিখ্যাত। এখানে প্রচুর সুপারি গাছ ও বাগান রয়েছে। এই সুপারি গাছের পাতা দিয়ে বাসন পত্র তৈরি করে বাজারজাত করণে পরিচিত করতে পারলে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবানের পাশাপাশি অনেক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।