সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহেলা, নির্লিপ্ততা, অসচেতনতা ও ঝুঁকি না নেয়ার কারণে নদী দখল-দূষণ, নাব্যতা হরণ হচ্ছে। এতে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে বলে জানান জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা ও মানিকগঞ্জের সীমানা এলাকা দিয়ে প্রবহমান ধলেশ্বরী নদী পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, নদী দখলে প্রথমে নদীর তীরবর্তী এলাকা দখল করে বালু ও মাটি ফেলে ভরাট করা হয়। এরপর নদীকে সংক্ষিপ্ত করে নির্মাণ করা হয় স্থাপনা। এই অনুশীলনের মধ্য দিয়ে সারা দেশের নদী ও খাল দখল হয়ে যাচ্ছে, যা বন্ধ করতে হবে।
মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, নদী রক্ষায় আইন আছে, কিন্তু আইনের প্রয়োগ নেই। ফৌজদারি আইনে নদী দখলের যে সাজার কথা বলা আছে, আইন করে তার মাত্রা আরও বাড়াতে হবে। উচ্চ আদালত থেকেও একই কথা বলা হয়েছে। নদী রক্ষা কমিশন থেকে আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে, যাতে সব বলা আছে।
তিনি বলেন, নদীর জমি অপরিবর্তনীয়, যা লিজ বা হস্তান্তর করা যায় না। এরপরও জেলা প্রশাসন থেকে নদীর ‘ফোরশোর’ (জোয়ার ও ঢেউ যত দূর আছড়ে পড়ে) এলাকার প্রায় ২০০ একর জমি চাষাবাদের জন্য লিজ দেওয়া হয়েছিল। কারখানার মালিক ও প্রভাবশালীরা ওই সব জমির লিজগ্রহীতাদের কাছ থেকে নিয়ে কারখানা ও স্থাপনা নির্মাণ করছেন।
নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার সাভারের তেঁতুলঝোড়া ও সিঙ্গাইরের ধল্লা এলাকায় ধলেশ্বরী নদীর দখলপ্রবণ এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সহসভাপতি ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদসহ জেলা, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, নদী ও নারী আজ সবচেয়ে বেশি বিপন্ন। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রশাসনের যোগসাজশে রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা নদী দখল করেন। শুধু প্রশাসন দিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা সম্ভব নয়। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন।