শীতের আগমনী বার্তা – ডিসেম্বর শেষে মৃদু ও জানুয়ারিতে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ
বাংলাদেশ, ঢাকা: বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী শীত মৌসুম আসতে হাতে ৯ দিনের মত বাকি। তবে শীতের আগমনী বার্তা এখনই পাওয়া যাচ্ছে প্রকৃতির প্রতিটি চিত্রে।
বিশেষ করে হিমালয়ের পাদদেশের সবথেকে কাছের অঞ্চল পঞ্চগড়সহ উত্তররের জেলাগুলোয় এখনই শীতের অনুভূতি বিদ্যমান।
আবহাওয়ার অফিসের পূর্বাভাস বলছে, তাপমাত্র দিনে দিনে কমতে থাকার ধারাবাহিকতায় এ মাসের শেষে উত্তরাঞ্চলসহ কয়েকটি অঞ্চলে এক থেকে দুটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ও জানুয়ারিতে ২ থেকে তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ হবার সম্ভাবনা রয়েছে। জানুয়ারিতে তাপমাত্রা চার ডিগ্রি থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের রূপ নিতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস জানাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ১লা ডিসেম্বর, মঙ্গলবার সভাশেষে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আবহাওয়া অফিসের হিসেবে, তাপমাত্রা কমে আট ডিগ্রি থেকে দশ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তা মৃদু, ছয় ডিগ্রি থেকে ৮ ডিগ্রি হলে মাঝারি এবং ৪ ডিগ্রি থেকে ছয় ডিগ্রি হলে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ।
গত কয়েক দিনে তেঁতুলিয়ার তাপমাত্রা বেশ কমতে দেখা গেছে। ২রা ডিসেম্বর, বুধবার সেখানে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এগার দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
ডিসেম্বর ২০২০ এর পূর্বাভাসে বলা হয়, এ মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে দ্রুত হ্রাস পাবে। তবে এ মাসে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিক মাত্রায় থাকতে পারে। এ মাসের শেষের দিকে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলে একটি থেকে দুটি মৃদু আট ডিগ্রি থেকে দশ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মত শৈত্যপ্রবাহ হবার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
চলতি ডিসেম্বর মাসে দেশের অধিকাংশ নদী অববাহিকা অঞ্চলে ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত বেশ কুয়াশা পড়তে দেখা যেতে পারে। আর সূর্য কিরণকাল থাকতে পারে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার কিছু কম বা বেশী সময়।
ডিসেম্বরে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে এটি বাংলাদেশ উপকূলে আসবে না।
আবহাওয়া অফিস জানায়, নভেম্বর’২০ মাসে গড় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা যথাক্রমে শূন্য দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস ও শূন্য দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। গত ১৩ই নভেম্বর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চাঁদপুরে পয়ত্রিশ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গত ২৩ নভেম্বর সর্বনিম্ন দশ দশমিক তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল তেঁতুলিয়ায়।
এদিকে তিন মাসের আবহাওয়ার পূর্বাভাসের রিপোর্টে দেখা যায়, জানুয়ারি ২০২১শে দুই থেকে তিনটি মৃদু আট ডিগ্রি থেকে দশ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মত থেকে মাঝারি (৬টি ধেকে ৮টি) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
যার মধ্যে দু’টি তীব্র (৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিতে পারে। এছাড়া উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি/ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা/মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে।
আবহাওয়ার প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে – প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, দুযোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে।