লিথিয়াম উত্তোলন ফলে তিব্বতের পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা
রাস্তায় চলা বৈদ্যুতিক গাড়ির বেশিরভাগের ব্যাটারিই লিথিয়াম-আয়ন থেকে নির্মিত। টেসলা থেকে ওলা পর্যন্ত, বেশিরভাগ প্রধান ব্যাটারি নির্মাতারা তাদের যানবাহনের চালিকা শক্তি হিসেবে এই সেলগুলো ব্যবহার করে। এসব কারণেই লিথিয়ামের চাহিদা এখন অনেক বেশি।
আর শীর্ষ ব্যাটারি উৎপাদক হিসেবে চীন এখন বাছবিচারহীন। দেশটির সবচেয়ে বড় লিথিয়াম খনি তিব্বতে। সেখানে দিন-রাত চলছে লিথিয়াম উত্তোলন। এতে ব্যাপক পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদরা।
সম্প্রতি জাপান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই খবর উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের মোট লিথিয়াম মজুদের ৮৫%-ই তিব্বতে। এতে চীনা কোম্পানিগুলো ক্রমশ খুবলে খাচ্ছে তিব্বতকে। ধ্বংস করছে তিব্বতের প্রাকৃতিক পরিবেশ। সাম্প্রতিক এক গবেষণার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিশ্বের বৃহত্তম ব্যাটারির বাজার হওয়ায়, চীনে লিথিয়ামের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ প্রয়োজন।
দুর্ভাগ্যবশত, এই চাহিদা তিব্বত মালভূমির মজুত শোষণ করছে। চীনা খনি শ্রমিকরা উপাদান আহরণ এবং প্রক্রিয়াকরণের ‘দ্রুত, সস্তা এবং নোংরা’ পদ্ধতির মাধ্যমে স্থানীয় পরিবেশকে দূষিত করছে।
চীনের প্রায় ৩.৬ মিলিয়ন টন লিথিয়াম মজুত তিব্বত, সিচুয়ান ও কিংহাই সংলগ্ন প্রদেশে শক্ত পাথরের খনিতে বিদ্যমান। পরিবেশগতভাবে অনিরাপদ খনন কৌশল এই অঞ্চলের বাস্তুসংস্থানকে ধ্বংস করছে।
এই খনন প্রক্রিয়া বিশেষ করে জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য হুমকিস্বরূপ। গবেষণায় এমন একটি ঘটনাও উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে খনন সংক্রান্ত কাজের ফলে হাজার হাজার মাছ মারা গেছে এবং তৃণভূমি ধ্বংস হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ইলেক্ট্রিক ভেহিক্যাল প্রস্তুতকারকরাও পরোক্ষভাবে সংকটকে ঘণীভূত করছে। টেসলা এবং বিওয়াইডির মতো বিশাল ইভি গাড়ি প্রস্তুতকারকরা চায় লিথিয়ামের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ। তাদের ক্রমাগত চাপ এই খনন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য পরোক্ষভাবে দায়ী।