লিডার্স সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর চারটি পরামর্শ
গত ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে বিশ্ব নেতাদের অংশগ্রহণে ‘লিডার্স সামিট’ জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের কাছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারটি পরামর্শ তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি এ পরামর্শের ভিত্তিতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণেরও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সারা বিশ্বের চল্লিশ জন রাষ্ট্রপ্রধানকে জলবায়ুবিষয়ক ভার্চুয়াল সম্মেলন ‘লিডারস সামিট’-এ অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শগুলো নিচে দেওয়া হলো –
- বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে উন্নত দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে অবিলম্বে একটি উচ্চাভিলাষী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
- একশো বিলিয়ন আমেরিকান ডলার তহবিলের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করতে হবে, যার ৫০ শতাংশ অভিযোজন ও ৫০ শতাংশ প্রশমনের জন্য ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে।
- প্রধান অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি খাতগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উদ্ভাবনের পাশাপাশি জলবায়ু অর্থায়নের জন্য বিশেষভাবে ছাড় দিতে হবে।
- সবুজ অর্থনীতি ও কার্বন প্রশমন প্রযুক্তির ওপর গুরুত্ব দেওয়া এবং এ লক্ষ্যে দেশগুলোর মধ্যে প্রযুক্তির বিনিময়ের প্রতি জোর দেন।
আগে ধারণকৃত ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারি আমাদের আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, বৈশ্বিক সমস্যা নিরসনে সব দেশের সমন্বিত উদ্যোগ অত্যন্ত প্রয়োজন।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে আবার ফিরে আসার পর দ্রুত জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন এবং উক্ত আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ করায় শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ভূসয়ী প্রশংসা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ মোট জিডিপির প্রায় ২.৫ শতাংশ বা প্রায় ৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ ও দুর্ভোগ মোকাবিলা এবং টেকসই জলবায়ু সহনশীল ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যয় ও উত্তোরনের পরিকল্পনা প্রনয়ণ করে চলেছে।
সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত প্রায় ১ মিলিয়নেরও বেশী রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। তারা দেশের প্রতিবেশকে অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপনে দেশব্যাপী ৩০ কোটি গাছের চারা রোপণের পরিকল্পনা নিয়েছে। এ ছাড়া কম-কার্বনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান’ প্রণয়নের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভি২০ (ভালনারেবল টুয়েন্টি) এর সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থ সমুন্নত রাখা।