রাজধানীবাসীর জীবনমান উন্নয়নে প্রায় সাড়ে সাতশ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।পরিকল্পনা কমিশন সূত্র থেকে জানা যায়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার প্রস্তাবিত ‘জরুরি পানি সরবরাহ প্রকল্পটি’ প্রাথমিক বাজেট ধরা হয়েছে ৭৩২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। যা পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে ব্যয় করা হবে। আর এর বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত।
আর প্রকল্পটি ঢাকা ওয়াসা বাস্তবায়ন করবে বলে জানা যায় স্থানীয় সূত্রে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১০ অক্টোবর পরিকল্পনা বিভাগের এ বিষয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হবে। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামীমা নার্গিসের সভাপতিত্বে সভায় প্রকল্পটির নানাদিক মূল্যায়ন করা হবে। সভায় প্রকল্পটির কোনো সংশোধন করতে হলে সেই পরামর্শ দিয়ে আবারও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্রকল্পটির সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অনুমোদন দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয় সরকার বিভাগ জানায়, প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ঢাকা মহানগরীতে ক্রমবর্ধিষ্ণু পানির চাহিদার প্রেক্ষিতে বিদ্যমান পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনার অতিরিক্ত ৪৪৭ এমএলডি পানি সরবরাহ করা।
প্রকল্পটি সম্পর্কে ঢাকা ওয়াসা জানায়, ঢাকা ওয়াসা মহানগরবাসীর নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। বর্তমানে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন-১৯৯৬ অনুযায়ী বাণিজ্যিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নগরবাসীদের সেবা প্রদান করছে। ঢাকা ওয়াসার দায়িত্ব হচ্ছে পাইপ লাইনের মাধ্যমে ঢাকা শহরের মানুষের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ করা। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসা গড়ে ২৪০০ এম এল ডি পানি উৎপাদন ও সরবরাহ করছে। যার ৮০ শতাংশ ভ‚গর্ভস্থ উৎস হতে প্রায় ৮৫০টি গভীর নলক‚পের মাধ্যমে এবং ২০ শতাংশ পানি ভ‚-পৃষ্ট উৎস হতে ৫ টি পানি শোধনাগারের মাধ্যমে সরবরাহ করে থাকে।
বর্তমানে ঢাকার ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষের পানির চাহিদা হচ্ছে প্রায় ২৪০০ এম এল ডি। প্রতি বছর জনসংখ্যা গড়ে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেই সাথে গভীর নলক‚পের উৎপাদন গড়ে ৫ শতাংশ হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ২০২৩ সালে জনসংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
জনগণের জীবনযাত্রার মান ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি ঘটায় তাদের মাথাপিছু পরিমাণগত পানি ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে ঢাকা শহরের আকার বৃদ্ধি পাওয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পানির চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২৩ সালে পানির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৫০০ এম এল ডি হবে। তাই এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা খুব জরুরি।