রাঙামাটি মোট ২৯টি ইটভাটার মধ্যে সবকটি অবৈধ
রাঙামাটিতে পরিবেশ ছাড়পত্র না নিয়ে অবৈধভাবে একের পর এক ইটভাটা নির্মাণ করা হচ্ছে। চলতি শুষ্ক মৌসুমে দুটি নতুন ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে।
কিছু রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তির তৎপরতায় পাহাড় কেটে এসব ইটভাটা নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসন ও পরিবেশবাদীদের আপত্তির পরও ইটভাটাতে বনের কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে।
সর্বশেষ লংগদু আটারকছড়া ইউনিয়নের তিন ব্রিজ এলাকায় কেবিএম ব্রিকস ও বাঘাইছড়ির মারিশ্যা ইউনিয়নের তুলাবান-মুসলিম ব্লক সীমান্তে ফাইভ স্টার ব্রিকস নামের দুটি ইটভাটা তৈরি হয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে দুই ইটভাটার নির্মাণকাজ শুরু হয়। তবে কোনোটিতেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি। ২০ ও ২১ জানুয়ারি এ দুটি ইটভাটায় অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। দুটি ইটভাটার চুল্লি ভেঙে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, রাঙামাটি জেলায় মোট ২৯টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে কাউখালী উপজেলায় ১৬টি, লংগদু উপজেলায় ৬টি, বাঘাইছড়িতে ৩টি, রাজস্থলীতে ৩টি ও কাপ্তাই উপজেলায় একটি ইটভাটা রয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের তালিকায় আছে ২৫টি। বাকি চারটি তাদের তালিকায় নেই।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, রাঙামাটিতে কোনো ইটভাটারই পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। ফলে সব কটিই অবৈধ। গত বছর অভিযান চালিয়ে কাউখালীতে বেশ কিছু ইটভাটা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আরও অভিযান চালানো হবে।
তিনি আরো জানান, ২০১৩ সালে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আইন হওয়ার আগে বিভিন্নভাবে ইটভাটা তৈরি হয়েছে। তবে আইন হওয়ার পর কোনো ব্যক্তিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি।
১৯, ২০ ও ২১ জানুয়ারি—এ তিন দিনে জেলার ৯টি ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এতে ৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ২১ জানুয়ারি লংগদুর কেবিএম ব্রিকস ও এডিবি ব্রিকসে অভিযান চালিয়ে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
২০ জানুয়ারি কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের আদর্শ গ্রামের জেবিএমকে ২৫ হাজার, বেতবুনিয়া মডেল ইউনিয়নের আমছড়ি গ্রামের মেসার্স কেবিএম ইটভাটাকে ২ লাখ, বাঘাইছড়ি উপজেলার পৌরসভার দুটি ও মারিশ্যা ইউনিয়নের একটি ইটভাটাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ধ্বংস করা হয় ১৫ হাজার ইট ও চুল্লি। এ ছাড়া ১৯ জানুয়ারি রাজস্থলীর দুই ইটভাটায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, রাঙামাটিতে ইট প্রস্তুত ও ভাটা নির্মাণে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকায় মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করেছেন।