34 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
দুপুর ২:৪৮ | ১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
মানমাত্রায় পরিবর্তনের ফলে ক্রমশ বাঁড়ছে দূষণ
পরিবেশ দূষণ বাংলাদেশ পরিবেশ

মানমাত্রায় পরিবর্তনের ফলে ক্রমশ বাঁড়ছে দূষণ

মানমাত্রায় পরিবর্তনের ফলে ক্রমশ বাঁড়ছে দূষণ

দেশে পরিবেশ দূষণ বাড়ছে। ক্রমশ কমছে পানি ও বায়ুর মান। রাজধানী ঢাকা এখন বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগরগুলোর একটি। বাদ যাচ্ছে না বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ শিল্পাঞ্চল রয়েছে এমন জেলাগুলো। এদিকে দূষণ বাড়লেও পরিবেশ অধিদপ্তরের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

দূষণ কমাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত না হলেও উল্টো পরিবেশ সূচকে উন্নতি দেখাতে খোদ মানমাত্রায় পরিবর্তন আনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশবিদরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এমনকি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন।

বায়ুমানের বৈশ্বিক সূচকে (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগরীগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান প্রায়ই শীর্ষে থাকে। এমনকি বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ রাজধানীর বাইরের শিল্পাঞ্চলগুলোয় দূষণ ঘটছে সহনীয় মাত্রার অনেক বেশি।

কারখানার রাসায়নিক বর্জ্যনিঃসৃত দূষিত পদার্থ মিশছে কৃষিজমি, নদী-খাল-বিলসহ জলাশয়ের পানিতে। এতে হুমকিতে রয়েছে প্রাণ-প্রতিবেশ, বাস্তুসংস্থান ও জনস্বাস্থ্য। এ নিয়ে ধারাবাহিক উদ্বেগ বাড়ছে পরিবেশবিদসহ সংশ্লিষ্ট সবার। দূষণ হ্রাসে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে ভূমিকা রাখতে পারেনি পরিবেশ অধিদপ্তরও।

অভিযোগ উঠেছে, ব্যর্থতা ঢাকতে এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে দূষণের গ্রহণযোগ্য মানমাত্রাই বদলে ফেলছে সংস্থাটি। পরিবেশ বিজ্ঞানীসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই নেয়া হচ্ছে দেশের পরিবেশ সূচকে উন্নতি দেখানোর প্রয়াস।

দূষণের গ্রহণযোগ্য মানমাত্রায় পরিবর্তন আনতে এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিধিমালায় পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এরই মধ্যে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালায় জনগুরুত্বপূর্ণ স্থান থেকে ভাটার গ্রহণযোগ্য দূরত্বসংক্রান্ত নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এছাড়া কিছু বিধিমালায় পরিবর্তনের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে। এসব বিধিমালায় দ্রুত পরিবর্তন আনার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।



এ রকম চিত্র প্রকৃতপক্ষেই দুঃখজনক। কারণ যেখানে সঠিক তথ্য নিরূপণের মাধ্যমে বায়ুদূষণ কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন ছিল, সেখানে উল্টো বিষয়টি আড়াল করার প্রচেষ্টা মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। এতে যে অন্তঃসারশূন্য কিছুটা ইতিবাচক ফল প্রকাশ পাবে তাতে পরিবেশের কোনো উপকার হবে না।

এজন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রকৃত বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করার মানসিকতা রাখতে হবে, যা এ মুহূর্তে পরিবেশের জন্য অতিপ্রয়োজন। না হলে দূষণের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ভোগান্তির প্রভাব পরবর্তী প্রজন্মের মাঝেও রয়ে যাবে। সবচেয়ে বড় কথা, হাল ছেড়ে দেয়া উচিত হবে না।

কারণ এটা সত্য যে নগরায়ণ, শিল্পায়ন ও পরিবহন ব্যবস্থায় রাস্তায় ধুলোবালি, কলকারখানা ও গাড়ির ধোঁয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক। কিন্তু তাতে পরিবেশ দূষণ কমাতে পদক্ষেপ না নিয়ে পরোক্ষভাবে দূষণের হার কম দেখানোর চেষ্টা প্রকৃতপক্ষেই অনাকাঙ্ক্ষিত।

উন্নত বিশ্বের দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া পরিবেশ দূষণ নিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করে। বসতভিটা নেই এমন এলাকায় শিল্প-কারখানা স্থাপনসহ রাস্তায় পরিবেশবান্ধব সাইকেল লেন রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে এ রকম সুপরিকল্পিত নগরায়ণ যেন চিন্তাও করা যায় না।

ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কারখানা স্থাপনকে খুব স্বাভাবিক গণ্য করা হয়ে থাকে। রাস্তায় অকারণে হর্ন বাজানো নিত্যদিনের চিত্র। এমনকি হাইড্রোলিক হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ হলেও তার বাস্তব প্রয়োগ হয় না। নদীদূষণের মাধ্যমে নদীর পানির রঙ পরিবর্তন করে ফেলা হয়।

কলকারখানার পাশাপাশি সুয়ারেজ বর্জ্য নদীতে মেশে। মেডিকেল বর্জ্যের ক্ষেত্রে কোনো ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থাপনা নেই। এক শ্রেণীর দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী এক্ষেত্রে চরম মাত্রায় উদাসীনতা প্রদর্শন করেন। হাসপাতালের বর্জ্য বাইরে বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে।

কৃষিজমি দখল করে অহরহ ইটভাটা নির্মিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বে গাফলতির অভিযোগ ওঠে। নির্মাণকাজ, অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ির ফলে রাজধানীর বায়ুদূষণ প্রতিদিনের চিত্র। এক্ষেত্রে পরিবেশ যেন অস্বাস্থ্যকর হয়ে না ওঠে, সেটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট নগর কর্তৃপক্ষের। কিন্তু সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে কিনা তা তদারকি করা উচিত।

এ রকম মাৎস্যন্যায় পরিস্থিতিতে মানমাত্রা সংশোধন করে ধীরে ধীরে সব বিধিমালায়ই পরিবর্তন আনা হবে বলে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন মহল থেকে নির্ধারিত মানমাত্রা দ্বিগুণ-তিন গুণও বাড়ানোর তদবির-সুপারিশ রয়েছে। এমনকি রীতিমতো চাপ প্রয়োগের অভিযোগও উঠেছে। এভাবে অন্যায্য চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করলে তা পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি করবে।

এতে বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা চিরস্থায়ীভাবে বসবাসের অযোগ্য তকমা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পরিবেশ দূষণ কমাতে সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য বিদ্যমান মানমাত্রা রক্ষায় সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সাহসী ভূমিকা কাম্য। আমরা প্রত্যাশা করি, পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতার বিষয়টি মাথায় রেখে এক্ষেত্রে দূষণ হ্রাসে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত