মহাকাশে ফের পাওয়া গেল প্রাণের আরও এক উৎসের সন্ধান। এই প্রথম উল্কাখণ্ডে চিনির অস্তিত্ব খুঁজে পেল নাসার মহাকাশযান।আবারও প্রমাণ হলো যে, প্রাগৈতিহাসিক পৃথিবীতে উল্কাখণ্ডের অভিঘাতেই সৃষ্টি হয়েছিল জীবনের স্পন্দন।’প্রোসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস’ পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধে এ কথা জানানো হয়েছে।
জাপানের তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষণার প্রধান ছিলেন ইয়োশিহিরো ফুরুকাওয়া।তিনি জানিয়েছেন, এর আগে উল্কাখণ্ড থেকে প্রাণ সৃষ্টি হওয়ার বেশ কিছু উপাদান পাওয়া গেছে। যার মধ্যে রয়েছে অ্যামিনো অ্যাসিড এবং নিউক্লিওবেস। কিন্তু প্রাণ উৎপত্তির অন্যতম উপাদান শর্করা বা চিনির অস্তিত্ব কখনও মেলেনি।
তিনি আরও জানান, এই প্রথম মহাকাশে রাইবোজ-এর প্রত্যক্ষ নমুনা পাওয়া গেছে। মহাকাশের এই শর্করা প্রাগৈতিহাসিক পৃথিবীতে হয়তো আরএনএ নির্মাণে সাহায্য করেছিল এবং তার থেকেই ক্রমে প্রাণ সৃষ্টি হয়েছিল।
গবেষকরা জানিয়েছেন, রাইবোজ-এর পাশাপাশি দু’টি পৃথক উল্কাখণ্ডে অ্যারাবিনোজ ও জাইলোজ-এর মতো জৈব-অপরিহার্য শর্করার সন্ধানও পেয়েছেন। স্বভাবতই নমুনাগুলি এনডব্লিউএ-৮০১ ও মার্চিসন-এর মতো কার্বন উপাদানে সমৃদ্ধ।আরএনএ (রাইবোনিউক্লিইক অ্যাসিড) গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রাইবোজ। আধুনিক বিশ্বে বার্তাবাহক অণু হিসেবে কাজ করে আরএনএ, যা ডিএনএ অণুর থেকে পাওয়া নির্দেশ কোষের ভিতরে উপস্থিত রাইবোজোম নামক আণবিক কারখানায় বয়ে নিয়ে যায়। এই বার্তা পড়েই জীবন প্রক্রিয়ার জন্য জরুরি নির্দিষ্ট প্রোটিন সমষ্টি সৃষ্টি করে রাইবোজোম।
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের গবেষক জেসন ডোয়ারকিন মনে করেন, এমন অতি-প্রাচীন উপাদানে রাইবোজ-এর মতো ভঙ্গুর অণুর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই আশ্চর্যের।