ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে এভারেস্টের আশপাশ
হিমালয়ের সবচেয়ে উঁচু চূড়া এভারেস্টের আশপাশ ভরে গেছে আবর্জনায়। বছরের পর বছর ধরে জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করতে এবং বরফ খনন করে মৃতদেহগুলো বের করে আনতে লেগে যেতে পারে কয়েক বছর। এভারেস্টের চূড়ায় ময়লা-আবর্জনা ও মৃতদেহ নিয়ে কাজ করা এক শেরপা এই তথ্য জানিয়েছেন।
নেপালের সেনা ও শেরপাদের একটি দল চলতি বছর এভারেস্ট আরোহণের মৌসুমে ১১ টন আবর্জনা, চারটি মৃতদেহ এবং একটি কঙ্কাল অপসারণ করেছে। আর এই কর্মযজ্ঞ পরিচালনায় অর্থায়ন করেছে নেপাল সরকার।
শেরপাদের দলের নেতৃত্ব দেওয়া আং বাবু শেরপা বলেন, ‘সাউথ কোলে এখনও ৪০ থেকে ৫০ টন আবর্জনা থাকতে পারে। পর্বতারোহীদের এভারেস্টের চূড়ায় আহরণ চেষ্টা করার আগে এই শিবিরের অবস্থান।
সেখানে ফেলে আসা আবর্জনাগুলোর বেশিরভাগই পুরনো তাঁবু, কিছু খাবারের প্যাকেজিং, গ্যাস কার্তুজ, অক্সিজেনের বোতল, তাঁবুর প্যাক ও তাঁবু বেঁধে রাখার জন্য ব্যবহৃত রশি।’
তিনি আরো বলেন, ‘৮ হাজার মিটার (২৬ হাজার ৪০০ ফুট) উচ্চতায় আবর্জনাগুলো জমাট বাঁধা অবস্থায় স্তরে স্তরে রয়েছে। আর এখানেই দক্ষিণ কোল শিবিরটি অবস্থিত।’
১৯৫৩ সালে পর্বতটি প্রথমবারের মতো জয় করার পর থেকে হাজার হাজার পর্বতারোহী এটি আরোহণ করেছেন। তাদের অনেকে নিজদের পদচিহ্নের পাশাপাশি ফেলে গেছেন আরও অনেক কিছু।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্বতারোহীদের মধ্যে নিজেদের আবর্জনা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সচেতনতা বেড়েছে। পাশাপাশি পরিবেশ সম্পর্কে পর্বতারোহীদের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। ফলে ফেলে আসা আবর্জনার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। কিন্তু আগের দশকগুলোতে এমনটা ছিল না।
অং বাবু জানান, সাউথ কোল এলাকায় তাদের কাজের জন্য আবহাওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ সেখানে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক পরিমাণের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। তাপমাত্রা কমে যাওয়াসহ বাতাস দ্রুত তুষার ঝড়ের সৃষ্টি করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভালো আবহাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল। কারণ সূর্যের তাপে বরফের আচ্ছাদন গলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হতো। কিন্তু সেই পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা সম্ভব নয়। অক্সিজেনের মাত্রা খুব কম থাকায় বেশিক্ষণ থাকাও কঠিন।’
তিনি আরো বলেন, ‘সাউথ কোলের কাছে বরফের গভীর থেকে একটি মৃতদেহ খুঁড়ে বের করতে দুই দিন সময় লেগেছিল। কাজটির আংশিক সম্পন্ন করার পর দলটিকে নিচের শিবিরে ফিরে যেতে হয়েছিল, কারণ ততক্ষণে আবহাওয়া প্রতিকূল হয়ে গেছে। আবহাওয়ার উন্নতির পরে আবার উদ্ধার কাজটি করতে হয়েছিল।’