25 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৮:৫৫ | ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
ভাঙন তীব্র হচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের
পরিবেশ গবেষণা পরিবেশ বিশ্লেষন প্রাকৃতিক পরিবেশ

ভাঙন তীব্র হচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের

ভাঙন তীব্র হচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের

বেশ কয়েক বছর ধরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ভাঙছে। গত কিছুদিনে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভাঙন আরও বেড়েছে। তৈরি হয়েছে বহু গুপ্তখালের। এ কারণে পর্যটকদের জন্য সৈকত যেমন অনিরাপদ হয়ে উঠেছে, তেমনই হোটেল-মোটেলসহ বিভিন্ন স্থাপনাও ঝুঁকিতে পড়েছে।

সমুদ্রবিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে সৈকতের এমন ভাঙন বাড়তেই থাকবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙান রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলছে।

পাউবোর দেওয়া বালুর বাঁধের কারণে সৈকতের ভাঙন তীব্রতর হচ্ছে। সৈকতের একদিকে বালুর বাঁধ দিলে, অন্যদিকে দ্রুতই ভাঙন দেখা দিচ্ছে। তা ছাড়া জিওব্যাগ ভর্তি ওই সব বালুর বাঁধও টেকসই হচ্ছে না।

গবেষকেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, সাগরে ঘন ঘন নিম্নচাপ লঘুচাপ-ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি কক্সবাজার সৈকতের জন্য বড় হুমকি তৈরি করেছে।

তবে সমুদ্র শাসনের নামে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) যে বালুর বাঁধ দিচ্ছে, তাকে অপরিকল্পিত বলে অভিহিত করছেন গবেষকেরা। এমন বালুর বাঁধ সৈকতের ভাঙন আরও তীব্রতর করছে বলে তাঁরা মনে করেন।

সৈকতের ভাঙন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কক্সবাজারের সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তিকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, বালুর বাঁধ দিয়ে সমুদ্র শাসন কিংবা ভাঙন রোধ করা মোটেও সম্ভব নয়।



জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রের পানির উচ্চতা দিন দিন বাড়ছে। বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগও। ভাঙন রোধে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে ভবিষ্যতে এ ভাঙন আরও তীব্র হতে পারে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ভাঙন বেশি হচ্ছে।

সমুদ্রের একূল ভাঙলে ওকূল গড়ে—প্রবাদ বচন উল্লেখ করে ড. শফিকুর রহমান বলেন, কক্সবাজার সৈকতেও এমন নজির আছে। কিন্তু অপরিকল্পিত বালুর বাঁধ দিয়ে কিছুদিন ভাঙন রোধ করা গেলেও অন্যদিকের সৈকত বিলীন হচ্ছে।

বালুর বাঁধও ভেঙে যাচ্ছে। বালুর বাঁধের পরিবর্তে শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো স্থায়ী প্রতিরক্ষাদেয়াল তুলে সমুদ্র শাসন করা যায়। এ জন্য গবেষণা দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।

গত ৫০–৬০ বছরে বালিয়াড়িতে এমন ভাঙনের নজির নেই জানিয়ে কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, পাউবোর অপরিকল্পিত বালুভর্তি জিওব্যাগের বাঁধের কারণে সৈকতের আরও অংশ ভেঙে যাচ্ছে। সমুদ্রের ঢেউ ও স্রোতধারা স্বাভাবিক নিয়মে চলে, বাধার সৃষ্টি হলে চালায় তাণ্ডব।

সমুদ্রের বিভিন্ন অংশে একাধিক গুপ্তখালের সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদ সভাপতি দীপক শর্মা বলেন, গত ১২ বছরে সমুদ্রে গোসলে নেমে অন্তত ৮৯ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।

সর্বশেষ গত ৪ সেপ্টেম্বর সুগন্ধা পয়েন্টের গুপ্তখালে আটকা পড়ে নিখোঁজ হন ঢাকার পল্লবী এলাকার কাজী জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে সজীব হোসেন (২৬)। এক দিন পর তাঁর মরদেহ ভেসে ওঠে তিন কিলোমিটার দূরের নাজিরারটেক সৈকতে।

পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী প্রজ্ঞান চাকমা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, সমুদ্রের উচ্চ জোয়ার, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৈকত বিলীন হচ্ছে। ভারী বর্ষণের সময় পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতেও সৈকতের বিভিন্ন অংশ ভেঙে যাচ্ছে।

গত তিন বছরে ভাঙন বাড়ছে। ভাঙন রোধে লাবণী থেকে সমিতিপাড়া পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার বালুভর্তি জিওব্যাগের বাঁধ দেওয়া হলেও তা টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে না।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত