COVID-19 এর কারণে বিশ্বব্যাপি মারাত্বক দুর্ভিক্ষ হতে পারে – বিশ্বখাদ্য সংস্থা
-সাদিয়া নূর পর্সিয়া
জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচির প্রধান ২১/০৪/২০২০ খ্রি:তারিখে সতর্ক করেছেন যে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব একটি “ক্ষুধার মহামারী” তৈরি করে বিদ্যমান সংকটকে আরও বাড়িয়ে তোলার হুমকি সৃষ্টি করছে।
বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (World Food Programme-WFP) এর নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলের ভার্চুয়াল অধিবেশনে বলেছেন “এখনও কোনও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়নি।
তবে আমি আপনাদের অবশ্যই সতর্ক করে দিচ্ছি যে, যদি আমরা পরস্পরের মধ্যে গমনাগমন সুরক্ষিত করতে, তহবিলের ঘাটতি মিটাতে এবং ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে বিঘ্ন এড়ানোর জন্য এখনই প্রস্তুতি এবং ব্যবস্থা না নিই – আমরা অল্প কয়েক মাসের মধ্যে বিশাল আকারের একাধিক দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে পারি,”।
বিসলে বলেছেন যে মহামারী শুরু হওয়ার আগেও সিরিয়া ও ইয়েমেনের যুদ্ধ, দক্ষিণ সুদানের সঙ্কট এবং পূর্ব আফ্রিকা জুড়ে পঙ্গপালের দঙ্গলসহ অনেক কারণে এই বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে বিশ্ব। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সাথে দুর্ভিক্ষ প্রায় তিন ডজন দেশকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
বিসলে বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে একটি সম্পূর্ণ ঝড়ের মুখোমুখি হয়েছি।
২০/০৪/২০২০খ্রি: তারিখে প্রকাশিত খাদ্য সঙ্কট সম্পর্কিত ২০২০ সালের বৈশ্বিক প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বজুড়ে ১৩৫ মিলিয়ন মানুষ ইতোমধ্যে অনাহারে ভুগেছে। বিসলে বলেন যে, মহামারীটির প্রভাবের কারণে চিত্রটি প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে।
তিনি বলেছেন যে “একটি বাস্তব আশঙ্কা রয়েছে যে ভাইরাস দ্বারা আক্রান্তের তুলনায় কোভিড-১৯ এর অর্থনৈতিক প্রভাবে বেশি লোক সম্ভাব্য ভাবে মারা যেতে পারে।”
বিশ্বজুড়ে সরকার কর্তৃক আরোপিত এই সব ধরণের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা (shutdowns) ইতোমধ্যে দরিদ্র দেশগুলিতে শ্রমজীবী দরিদ্রদের মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশ যারা বিশ্বের শিল্পউন্নত দেশগুলোতে কর্মরত প্রবাসীদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে প্রেরিত অর্থ (remittances) হতে উপকৃত হয়, সে সকল দেশের এই অর্থ প্রবাহ কমে যেতে দেখবে। যে দেশগুলি পর্যটনের উপর নির্ভরশীল তাদের রাজস্ব হ্রাস পেতে থাকবে এবং তেলের দাম কমে যাওয়া সেই দেশগুলিকে ক্ষতি করবে যারা দক্ষিণ সুদানের মতো একমাত্র তেল রপ্তানির উপর নির্ভরশীল।
শাটডাউনের ফলে ঘটে যাওয়া অর্থনৈতিক ধ্বংসষজ্ঞ দরিদ্র দেশগুলোকে ধনী দেশগুলির সহায়তা ও সরবরাহ কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করবে এবং সরবরাহের শৃঙ্খলগুলোকে ( supply chains) ক্ষতিগ্রস্ত কররা হুমকিতে ফেলবে।
সঙ্কটের প্রতিক্রিয়া জানাতে, বিসলে একটি “বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিরতি” ঘোষণা করেছেন এবং বিশ্বব্যাপী সংঘর্ষে জড়িত পক্ষগুলিকে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা “সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের দ্রুত ও নিরবচ্ছিন্ন মানবিক প্রবেশাধিকার” দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আবেদন করেছেন যে, ইতোমধ্যে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা কর্তৃক যে ১.৯ বিলিয়ন ডলার এর অনুদান চাওয়া হয়েছে তা সংস্থাটির তিন মাসের খাদ্য মজুদের কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে পারে, পাশাপাশি বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে অতিরিক্ত ৩৫০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।
বিসলে বলেন “সত্যটি হল আমাদের হাতে সময় নেই। সুতরাং, তাই আসুন আমরা বুদ্ধিমানের মতো কাজ করি – এবং আসুন দ্রুত কাজ করি,”। তিনি আরও বলেন “আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের দক্ষতা এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা নির্দিষ্ট দল ও প্রোগ্রামগুলি একত্রিত করতে পারি যা নিশ্চিত করতে পারবে কোভিড-১৯ মহামারীটি যেন মানবিক ও খাদ্য সংকট বিপর্যয়ে পরিণত না হয়।”
Source: USA Today.