32 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
দুপুর ১:৪০ | ২২শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
বিজ্ঞাপনের জন্য গাছের বুকে পেরেক
প্রাকৃতিক পরিবেশ

বিজ্ঞাপনের জন্য গাছের বুকে পেরেক

বিজ্ঞাপনের জন্য গাছের বুকে পেরেক

সড়কের পাশের গাছগুলো মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু হলেও অসচেতনতার কারণে প্রতিনিয়ত বিজ্ঞাপনদাতাদের নিষ্ঠুরতার শিকার হচ্ছে। গাছ পেরেকবিদ্ধ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার লাগানোর ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। এতে সড়কের পাশের গাছগুলো পড়েছে ঝুঁকির মুখে।

কুড়িগ্রাম শহরের ত্রিমোহনী এলাকায় শতাধিক বছরের পুরোনো ‘রেইনট্রি’ নামে গাছটি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ফেস্টুন, ব্যানার ও রাজনৈতিক নেতাদের শুভেচ্ছা ব্যানারে ছেয়ে গেছে।

পৌর শহরের কলেজ মোড় থেকে সার্কিট হাউস রোড ও কলেজ মোড় থেকে তালতলাগামী রোডে ভর্তির বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন চিকিৎসকের প্রচারের সাইনবোর্ড চোখে পড়ে। শুধু পৌর এলাকায় নয়, জেলা শহর হয়ে বিভিন্ন উপজেলা শহরে যেতে সড়কের দুই পাশের গাছে গাছে পেরেকবিদ্ধ এমন বিজ্ঞাপন দেখা যায়।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও পরিবেশবিদ মীর্জা মো. নাসির উদ্দীন বলেন, ‘গাছ প্রতিনিয়ত আমাদের অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখছে। কিন্তু গাছেরও প্রাণ আছে—এটা আমরা কেউ অনুভব করছি না।



শহরের অধিকাংশ গাছে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন টাঙানোয় সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেওয়া দরকার। যেসব প্রতিষ্ঠান গাছে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন লাগাচ্ছে, তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত। সেই সঙ্গে গাছে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া নিষিদ্ধ করা উচিত।’

কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে যতিনেরহাট থেকে আনন্দবাজারের দূরত্ব এক কিলোমিটার। এইটুকু সড়কের দুই পাশের গাছে উৎসর্গ নার্সিং ইনস্টিটিউটের অর্ধশত ফেস্টুন লাগানো দেখা যায়।

কুড়িগ্রামের শাপলা চত্বর থেকে ত্রিমোহনী বাজারে যেতেও গাছে গাছে পেরেক ঠুকে লাগানো একই প্রতিষ্ঠানের ব্যানার ও ফেস্টুন চোখে পড়ে। একই সড়কে গাছে লাগানো মেডিকেয়ার নার্সিং কলেজ ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছাবার্তার ফেস্টুন দেখা গেছে।

কুড়িগ্রাম পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর পৌরসভায় বিজ্ঞাপনের জন্য বিভিন্ন অনুমোদিত কোম্পানির লোকজন আসেন। তাঁদের কাগজ যাচাই-বাচাই করে বিজ্ঞাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়।

কিন্তু এ বছরে পৌর শহরে অননুমোদিত বিজ্ঞাপনের সংখ্যা বেড়েছে। এগুলোর মধ্যে অধিকাংশই বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি বিজ্ঞাপন ও চিকিৎসকদের প্রচারের ফেস্টুন।

পৌরসভার মেয়র মো. কাজীউল ইসলাম বলেন, গাছে গাছে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন লাগানো বেসরকারি বিজ্ঞাপনদাতারা অননুমোদিত। অধিকাংশ বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান বাইরের জেলার, তাই চাইলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উপায় নেই।

পৌর শহরের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য এসব অননুমোদিত বিজ্ঞাপন অপসারণ শুরু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অর্ধশতাধিক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিজ্ঞাপনী ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করা হয়েছে।



জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম পৌরসভা ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অননুমোদিত বিজ্ঞাপনের সংখ্যা কত, সেটি নিয়ে কোনো জরিপ নেই। তবে গাছে গাছে পেরেক ঠুকে লাগানো বিজ্ঞাপন তুলনামূলক বেড়ে গেছে। মানুষ সচেতন না হলে শুধু আইন প্রয়োগ করে এগুলো কমানোর উপায় নেই।

কুড়িগ্রামের পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, শহর ও গ্রামের সড়কগুলোর পাশের গাছে গাছে বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেখা যায়। অধিকাংশ ফেস্টুন, ব্যানার ও বিজ্ঞাপন গাছের গায়ে পেরেক ঠুকে লাগানো। এ কারণে গাছটি মারা গিয়ে পরিবেশের ক্ষতি হতে পারে।

কিন্তু দেয়াললিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইনে পরিবেশবিষয়ক অধিদপ্তরকে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। তাই তারা দেখেও ব্যবস্থা নিতে পারে না। তবে পরিবেশবিষয়ক অধিদপ্তর গাছে পেরেক মারা বন্ধ করতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে লিফলেট বিতরণ করে থাকে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, গাছে পেরেক লাগিয়ে বিজ্ঞাপনী ব্যানার-ফেস্টুন টাঙানো অমানবিক। আইন প্রয়োগের চেয়ে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।

কুড়িগ্রাম পৌর শহরের গাছে গাছে পেরেক দিয়ে লাগানো বিজ্ঞাপন অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে। এরপর নতুন করে কোনো অননুমোদিত প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপন দিলে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত