সম্প্রতি ভারত বায়ুদূষণের কারণে দীপাবলীর আগে দিল্লী,কলকাতাসহ আরও কয়েকটি এলাকার ওপর সব ধরনের বাজির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যেহেতু দীপাবলীতে অনেক বায়ুদূষণ হয়ে থাকে তাই দেশটির আদালত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র দীপাবলি, পুজোর সময়ই কেন এই নিষেধাজ্ঞা? দিল্লী-কলকাতা সারবছরই বিভিন্ন কারণে দূষণের কবলে থাকে। তাই সারাবছরই এ দূষণ মোকাবিলা নয় কেন? সরকারের উচিত দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার উৎসমূল থেকে দূষণ দূর করা আর সেটাই হবে সবচেয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ৷
তাছাড়া দিল্লি প্রতি বছরের মতো এবারও মারাত্মক দূষণের কবলে। গত বছরের মতো এবারও হাজার হাজার একর জমির কৃষিবর্জ্য পোড়ানোর কারণে দূষণ আবারও বেড়েছে ৷ এদিকে কলকাতায় দিল্লির মতো সিএনজি ব্যবহৃত না হলেও অপরিকল্পিত নির্মাণ কাজ, রাস্তা সংস্কার, বহুতল নির্মাণ, উন্মুক্ত স্থানে রাখা সিমেন্ট-বালুসহ বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া নিয়মিত কলকাতার বাতাসে মিশে বায়ুকে আরও দূষিত করে তুলছে ৷ যা নির্মূল করতে হলে সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
সাধারণভাবে কলকাতার বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ২০০-৩০০ মাইক্রোগ্রাম পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) বা অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা থাকে। দীপাবলির সময় বাজি পোড়ানোর ফলে তা অনেকটা বেড়ে যায়৷ ফলে এই বিষাক্ত গ্যাস বাতাসে মিশে করোনা আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট বাড়াতে পারে বলে এবার বাজি নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ লকডাউনের সময় পিএম ১০০-র নীচে নেমে গেলেও আনলক পর্ব শুরু হতেই বাতাসে পিএম-এর মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ১৬ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে৷ যার কারণে দীপাবলিতে আরও বৃদ্ধির আশঙ্কায় জনস্বার্থ মামলা হয় আদালতে৷
দূষণ দূরীকরণ সম্পর্কে দিল্লি আইআইটি-র অধ্যাপক ও বিশেষজ্ঞ সোমনাথ বৈদ্য ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কালীপুজোয় বাজি পোড়ানো দু-একদিনের ব্যাপার৷ এক্ষেত্রে সতর্কতা অবশ্যই জরুরি৷ কিন্তু বিভিন্ন কারণে দূষণ সারা বছরই হচ্ছে৷ তাকে নিয়ন্ত্রণ করার কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না৷ অর্থাৎ যে কারণে দূষণ তৈরি হচ্ছে তা নির্মূল করার উদ্যোগ নেই৷ শুধু দূষণ হলে তা কমানোর কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে৷ এই পদক্ষেপ জরুরি নয় তা বলছি না, কিন্তু বেশি জরুরি দূষণকে তার উৎস থেকে নিশ্চিহ্ন করা ৷”