বায়ু হতে কার্বন ডাই অক্সাইড অপসারণে ঝিল্লি প্রদ্ধতি উৎকৃষ্ট – কিউশু বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান

বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের ফলে জলবায়ু পরিবর্তন পৃথিবীতে মানুষের টিকে থাকার হুমকী সৃষ্টি করেছে। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বিপর্যয়কর দাবাদাহ, দাবানল, ঝড় এবং বন্যা, ভূমি ধ্বস সংগঠিত হচ্ছে, উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরুর বরফ গলে সমুদ্রের পানির উচ্ছতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফলে বাংলাদেশসহ এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, প্রশান্ত সাগরীয় দ্বীপাঞ্চল সমুদ্রে তলিযে যাচ্ছে এবং মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।
মানুষের কর্মের ফলে বায়ু মন্ডলে গ্রীণ হাউজ গ্যাস ( কার্বন ডাই অক্সাাইড,মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি) এর নি;সরণ ঘটছে। ফলে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে। গ্রীণ হাউজ গ্যাসগুলোর মধ্যে কার্বণ ডাই অক্সইড (CO2)ই প্রধান।
এ কারণে বায়ু মন্ডলে গ্রীণহাউজ গ্যাস তথায় কার্বন ডাই অক্রাইড এর ক্রমাগতভাবে নিস:রণের বিপরীতে অভিনব প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়ুমন্ডল হতে কার্বন ডাই অক্সাইড অপসারণ বা শোষনের মাধ্যমে বায়ুমন্ডল কার্বণ নিরপেক্ষ (Neutral) করার সমাধানগুলোর বিকাশ প্রয়োজন।
জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকারী প্যানেল (Intergovernmental Panel for Climate Change – IPCC) এর সুপারিশ অনুসারে বায়ু থেকে সরাসরি কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) গ্রহণ (direct air capture, DAC) একটি গ্রহনযোগ্য প্রদ্ধতি যার মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১.৫° সেন্টিগ্রেডের নীচে রাখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বায়ুমন্ডল হতে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) অপসারণের DAC প্রদ্ধতির ব্যাপক উন্নয়নের ফলে ইতোমধ্যে বায়ুমন্ডলে যে কার্বণ ডাই অক্সাইড নির্গমণ হয়েছে (historical emissions) তা হ্রাস করা সম।ভব হবে। কেবলমাত্র বর্তমানে বৈশ্বিক কার্বণ নির্গমণের সাথে তুলনা করে বায়ুমন্ডল হতে CO2 অপসারণের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে CO2 এর কার্যকর হ্রাস সম্ভব।
বর্তমান DAC প্রযুক্তিগুলো মূলত সরবেন্ট-ভিত্তিক প্রদ্ধতি (sorbent-based systems) এর উপর ভিত্তি করে যেখানে CO2 উচ্চভাবে আকর্ষণ করার বিশেষ দ্রবণে বা বিশেষ যৌগিক মিশ্রনের আচ্ছাদিত ছিদ্রযুক্ত কঠিন পৃষ্ঠের উপরে আটকা পড়ে। এই প্রক্রিয়াগুলি বর্তমানে ব্যয়বহুল, যদিও প্রযুক্তিগুলির বিকাশের ফলে ব্যয় হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কার্বন ডাই অক্সাইড পৃথক করার জন্য ঝিল্লি ক্ষমতা ভালভাবে পরিক্ষীত ও নথিভুক্ত এবং শিল্প কার্যক্রমে এর কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়। দুর্ভাগ্যজনক হলো DAC এর ব্যবহারিক দক্ষতা এর পরিচালনার জন্য এর কম সন্তোষজনক।
সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে জাপানের কিউশু বিশ্ববিদ্যালয় এর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কার্বো-নিউট্রাল এনার্জি রিসার্চ (I2CNER) এবং জাপানের ন্যানোমেব্রেন টেকনোলজিস ইনকর্পোরেশন এর গবেষকরা রাষ্ট্রের সুযোগ নিয়ে ঝিল্লি-ভিত্তিক DAC (m-DAC) এর জৈব পলিমার ঝিল্লির সম্ভাব্যতা ও কার্যক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
সিমুলেশন প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে তারা দেখিয়েছে যে প্রতিযোগিতামূলক অধিক শক্তি ব্যয় করা হলে m-DAC এর মাধ্যমে লক্ষ্য অ।র্জণ করা সম্ভব। দেখা গেছে যে একটি বহু-পর্যায়ের পৃথককরণ প্রক্রিয়ায় বায়ুর CO2 (0.04%) হতে 40% পর্যন্ত শোষণ করতে পারে।
বায়ু মন্ডল হতে উচ্চ CO2 গ্রহনে ঝিল্লির সম্ভাবনা এবং সংমিশ্রণ উপর ভিত্তি করে CO2 অর্থনীতি চালুর বাস্তবসম্মত উপায় হতে পারে। এই অনুসন্ধানের উপর ভিত্তি করে কিউশু বিশ্ববিদ্যালয় দল একটি সরকার-সমর্থিত মুনশট গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মসূচী (Moonshot Research and Development Program )শুরু করেছে।
এই কর্মসূচীতে ঝিল্লি দ্বারা বায়ুমণ্ডল থেকে সরাসরি CO2 আটকানো এবং পরবর্তী সময়ে মূল্যবান উপকরণগুলোতে রূপান্তরাই এর প্রধান বিকাশের লক্ষ্য।