বাগেরহাটে অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ৭টি উপজেলার কয়েক হাজার মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। যদিও জেলা মৎস্য বিভাগ এই ক্ষতির পরিমাণ ১০ কোটি টাকা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।
জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, অতিবৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বাগেরহাট সদর, মোংলা, রামপাল, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, চিতলমারী ও কচুয়া উপজেলায় ৫ হাজার ২৭৪টি মৎস্যঘের ডুবে গেছে। প্রাথমিকভাবে এর ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা।
চিতলমারী উপজেলার বারাশিয়া বিলের মেসার্স জাহিদ ট্রেডার্সের মালিক মৎস্য চাষি জাহিদুর রহমান জানান, আম্পান, বুলবুলের পর সর্বশেষ অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তার ৪০ একরের মাছের ঘেরটি একেবারে ডুবে গেছে। এতে ৫০ লাখের বেশি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তিনি মাছের ঘেরটি করেছিলেন।
একই উপজেলার হিজলা গ্রামের চিংড়ি চাষি নাজমুল হক টিপু জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে তাদের বিলের মাছের ঘেরগুলো একাকার হয়ে গেছে। সবোর্চ্চ চেষ্টা করেও রক্ষা করা যায়নি। এমন বিপর্যয়ে তিনিসহ এলাকার চিংড়ি ব্যবসায়ীরা চরম হতাশায় ভুগছেন।

রামপাল উপজেলার ছোট কাঠালিয়া গ্রামের চিংড়ি চাষি রবিউল ইসলাম খোকন জানান, প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে ঘেরগুলো ডুবে সব মাছ ভেসে গেছে। এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বাগেরহাট জেলার চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি ফকির মহিতুল ইসলাম সুমন বলেন, এখনই চিংড়ি ধরার সময়। এতদিন মাছ কম পেয়েছে চাষিরা। প্রতিটি ঘেরই মাছে ভরা ছিল। জোয়ারের পানি ও প্রবল বর্ষণে জেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার চিংড়িঘের ডুবে গেছে। বিশেষ করে রামপাল ও মোংলা উপজেলার ঘেরগুলোতে প্রচুর মাছ ছিল। এতে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি ক্ষতি নিরূপণ করে চাষিদের সরকারি সহায়তা দেওয়ারও আহ্বান জানান।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. খালেদ কনক জানান, অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে জেলার ৭টি উপজেলার ৫ হাজার ২৭৪টি মৎস্যঘের ডুবে প্রায় ১০ কোটি টাকার চিংড়িসহ বিভিন্ন মাছ ভেসে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা ক্ষয়-ক্ষতির সঠিক তথ্য নিরূপণে কাজ করে যাচ্ছেন। দুই-একদিনের মধ্যে প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাবে।