প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন জরুরি
দেশের বনভূমি এবং নদী রক্ষা না করতে পারলে আমরা আগামীতে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়ব। সেই বিপর্যয় শুধু প্রাকৃতিক নয়, সামাজিকও হবে। পরিবেশবিদরা বারবার এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের মন্তব্যগুলো আমাদের সামনে একটি স্পষ্ট বার্তা তুলে ধরে এখন আর সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই।
অবৈধ দখলদাররা যত প্রভাবশালীই হোক, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে, বনভূমি ও পরিবেশ সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেই হবে।
গাজীপুরের ৯০ একর বনভূমি দখল হয়েছে, যার মধ্যে ইতোমধ্যে ১৬ একর উদ্ধার করা হয়েছে। এই ধরনের উদ্যোগ সরকারের নীতির বাস্তবায়ন প্রমাণ করে, যেখানে বনভূমি এবং জলাভূমি রক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তৎপর রয়েছে।
শিল্পদূষণ, পৌরসভার বর্জ্য এবং প্লাস্টিকদূষণ এই তিনটি বড় কারণে নদীগুলো আজ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। নদী আমাদের জীবনের অঙ্গ, এবং এর অবস্থা উন্নতির দিকে না গেলে দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ সংকটাপন্ন হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণদের নদী রক্ষায় সচেতন করার জন্য গাজীপুরে আয়োজিত ‘নদী রক্ষায় যুব সম্মেলন’ অত্যন্ত সময়োপযোগী।
তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে, কারণ নদী রক্ষায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে পরিবেশ সুরক্ষা সম্ভব হবে না। তাদের উচিত, প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং নদী দূষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
পরিবেশসংক্রান্ত সচেতনতা আন্দোলন শুধু সরকার বা কোনো সংস্থার উদ্যোগের বিষয় নয়, এটি একটি জাতীয় আন্দোলন হতে হবে, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
কৃষি, শিল্প, বন ও নদী এসবের সঙ্গে আমাদের জীবন গভীরভাবে জড়িয়ে রয়েছে। তাই এসবকে রক্ষা করতে সরকার, প্রশাসন এবং জনগণের সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন।
পরিবেশ রক্ষায় সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করছে, তা ইতিবাচক। তবে, এর কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। যদি আজ আমরা পদক্ষেপ না নেই, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যে বিপদের সম্মুখীন হবে, তা চূড়ান্ত হতে পারে।
উপদেষ্টা যেমনটা বলেছেন, ‘আগামী প্রজন্মকে যদি একটি দূষণমুক্ত নদী না দিতে পারি, তাহলে তারা কোথায় যাবে?’
আজকের পরিবেশের সুরক্ষায় আমাদের সিদ্ধান্তগুলোই আগামী দিনের পৃথিবীকে নির্মাণ করবে।