প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে মারা যাচ্ছে কুয়াকাটা সৈকতের কেওড়া গাছ
কুয়াকাটার গঙ্গামতির এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কেওড়া প্রজাতির গাছ মারা যাচ্ছে। ঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকূলের মানুষের জানমাল রক্ষায় করা এ বনের গাছ মরে যাওয়ার কারণে দুর্যোগ ঝুঁকি বাড়ছে। বন বিভাগের দাবি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে স্ফীত জোয়ারের সাথে সৈকতে বালু জমার কারণে এসব গাছ মারা যাচ্ছে।
পটুয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, সৈকতে প্রতিবছর গাছ লাগানো হচ্ছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাগরের উচ্চতা ক্রমশ বাড়ছে এবং উঁচু জোয়ারের পানি সৈকতে আঘাত হানছে।
এ জোয়ারের সাথে প্রচুর বালু সৈকতে জমছে আর এ বালুতে গাছের গোড়া বা শ্বাসমূল ঢেকে যাচ্ছে। এভাবে শ্বাসমূল ঢেকে যাওয়ায় গাছগুলো মারা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বছরে কমপক্ষে ১০ হাজার কেওড়া গাছ মারা যায়।
গঙ্গামতি এলাকার মহিউদ্দিন সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি বলেন, যে সব স্থানের গাছ মরে গিয়ে ফাঁকা হয়ে গেছে সেখান থেকে সাগরের প্রচন্ড ঢেউ সরাসরি উপকূলে আঘাত করে এবং তীব্র ভাঙন দেখা দেয়।
অপর জেলে আবুল কালাম জানান, গাছগুলো একে একে মারা যাচ্ছে এটা আমাদের জন্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। গাছগুলো মারা যাবার কারণ খুঁজে আবারো গাছ রোপনের ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক)র সভাপতি রুম্মান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়াকাটা সৈকতে দাঁড়িয়ে সুর্যোদয় ও সুর্যাস্ত দেখার সুযোগ থাকায় এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা কুয়াকাটা ভ্রমণে আসেন।
আগত পর্যটকরা সমুদ্র দেখার পাশাপাশি এখানকার সবুজ বনায়নসহ নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন। কিন্তু সৈকতের গঙ্গামতি এলাকার গাছ কমছে। কুয়াকাটা সৈকতের সৌন্দর্য বাড়াতে পরিকল্পিত বনায়নসহ নানা উদ্যোগ নেয়া জরুরি।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, ঝড়-বন্যাসহ নানা ধরনের দুর্যোগ থেকে সৈকতকে রক্ষা করার জন্য সৈকতের গাছগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এক সময়ে সৈকতে নারিকেল বাগান ছিল কিন্তু সৈকতের অব্যাহত ভাঙনে তা বিলীন হয়ে গেছে। কুয়াকাটা সৈকতকে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষাসহ সবুজায়ন করলে দেশি-বিদেশী পর্যটক সংখ্যা আরও বাড়বে।